কী করে ১৪ ঘণ্টা পানির নিচে বেঁচে ছিলো দেড় বছরের শিশুটি
দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ির সিট থেকে উল্টো হয়ে ঝুলে আছে দেহ। তা একেবারে নিস্তেজ। শনিবার ১৪ ঘন্টা ধরে স্প্যানিশ ফর্ক নদীতে অর্ধনিমজ্জিত থাকা গাড়ি থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া লিলির অবস্থা ছিল এমনটাই। দুর্ঘটনাকবলিত হওয়ার পর মা গ্রসবেকের সঙ্গে লিলিরও হয়তো জীবনাবসান হত যদি না সেদিন মাছ ধরার জন্য কেউ ওই জায়গায় না যেত। খবর না দিত উদ্ধারকারী দলকে। পুলিশের মতে রাস্তা থেকে দুর্ঘটনাস্থলটি কারও নজরে আসার সম্ভাবনাই ছিল না।
উদ্ধার হওয়ার বর্তমানে সুস্থ আছে লিলি। স্বজনরা জানান, স্বাভাবিকভাবেই খেলাধুলা করছে সে। তবে প্রচন্ড ঠাণ্ডা এবং কোন রকমের খাদ্য আর পানীয় ছাড়া কিভাবে ১৪ ঘন্টা ধরে পানির নিচে থাকার পরও বেঁচে আছে লিলি? এমন প্রশ্নই ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে এখন সবার মাঝে। ডাক্তারদের মতে ওই ধরনের শীতল তাপমাত্রার পানি জীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
তবে দুর্ঘটনাস্থলের বর্ণনা দিয়ে সিএনএন এর সংবাদকর্মী এলিজাবেথ কোহেন জানান, গাড়ির আসনের কারণেই ওইদিন বেঁচে যায় লিলি। তাঁর মন্তব্য, শিশুটি যে আসনে বসা ছিল তা খুব মজবুত ছিল এবং আসনটি খুব ভালভাবে গাড়ির সঙ্গে যুক্ত ছিল। শিশুটির দেহ উল্টো হয়ে আসন থেকে ঝুলে গেলেও শিশুটি পড়ে যায়নি। শিশুটির দেহের অবস্থান ঠাণ্ডা পানি থেকে উপরেই ছিল। আর তাই পানিতে ভিজে যাওয়ার চেয়ে ওই তাপমাত্রায় শুষ্ক অবস্থায় থাকাটা জীবনের অনুকূলে বলে মনে করেন কোহেন। তাঁর মতে এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় কাজ করতে পারে। আর তাহল শিশুটি মোটাসোটা ছিল। এ জায়গায় নবজাতক থাকলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত বলেও মত তার।
লিলিকে উদ্ধারের পেছনে শোনা যাচ্ছে এক রহস্যজনক শব্দের কথাও। ওয়ার্নার নামে এক পুলিশ কর্মকর্তার দাবি; পানিতে নামার পর বাঁচাও, বাঁচাও বলে শব্দ শুনতে পেয়েছেন তিনি। তবে তা কোন শিশুর কন্ঠ ছিল না। ওয়ার্নারের মতে এমন অনেক কিছুই ঘটে যার কোন ব্যাখ্যা হয় না। একইরকম শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন আরেক উদ্ধারকারীও। তাদেও মতে, ওই আওয়াজই খুব দ্রুত গাড়িটি উপরে তুলতে তাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল।
শুক্রবার দুর্ঘটনার শিকার হওয়া ওই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন লিলির মা গ্রসবেক। ব্রিজ থেকে নদীতে পড়ে যায় গাড়িটি। তবে এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনার কারণ জানতে পারেনি পুলিশ।
মন্তব্য চালু নেই