কমেছে সবজির দাম, স্বস্তিতে ক্রেতা
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে এখন শীতকালীন টাটকা সবজি। প্রথম দিকে দাম একটু বেশি থাকলেও বর্তমানে তা অনেকটা কমেছে। কমেছে পেঁয়াজের দামও। পণ্যের দাম অনেকটা হাতের নাগালে থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে আলাপকালে এমনটিই জানা গেছে।
শুক্রবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, স্বামীবাগ, কাপ্তানবাজার, সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি বেগুন ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা), সাদা গোলাকার বেগুন ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকায়, মরিচ ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা), টমেটো ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকায়), শসা ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা), করলা ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা), পটল ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা), ঢেঁড়স ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা, উচ্ছে ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা), চিচিঙ্গা ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা), পেঁপে ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা, জলপাই ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা (গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা), ধুন্দুল ৪৫ টাকা থেকে ৫৫ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা, কচুর ছড়া ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা, সাদা গোল আলু ২৪ টাকা থেকে ২৮ টাকা, লাল গোল আলু ৩৮ টাকা থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিটি বড় লাউ ৪০ টাকায় এবং ছোট লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি ছোট কুমড়া ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা এবং বড় কুমড়া ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, বাজারে শীতের শাকসবজি আসতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে যে ফুলকপি বা বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকায় তা আজ (শুক্রবার) বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা থেকে ৩৫ টাকায়। বিশেষ করে পাইকারি বাজারে আমদানি বেশি থাকায় দামে কিছুটা সাশ্রয় পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান তারা।
কাপ্তান বাজারের কাঁচাপণ্যের ব্যবসায়ী হাফিজ হাওলাদার বলেন, ‘বাজারে কাঁচাপণ্য আমদানি বেশি। ফলে দাম অনেকটা ক্রেতাদের হাতের নাগালে পৌঁছেছে। বিক্রিও বেশি হচ্ছে।’ দাম কমায় বিক্রিও বেশি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, অনেকদিন কাচাপণ্যের সংকট ছিল কিন্তু এখন শীতকালীন কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে। তাই দাম অনেকটা কম। আমদানি আরো বাড়লে দাম আরো কমবে বলে জানান তারা।
এদিকে বাজারে পেঁয়াজের দাম আরেক দফা কমেছে। মানভেদে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা। প্রতিকেজি বিদেশি পেঁয়াজ ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৬৫ টাকা থেকে ৬৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
তবে বাজারে রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতিকেজি দেশি রসুন ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিকেজি আদা ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী বাজারে কথা হয় ক্রেতা হাফিজ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময়ই চাই পণ্যের দাম হাতের নাগালে থাকুক। অনেক দিন পর দাম কিছুটা হলেও হাতের নাগালে এসেছে। বিশেষ করে পেঁয়াজের দাম কমেছে। আরও কমা উচিত।’
তবে বাজারে পণ্য সংকট তৈরি করে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে করে অতিরিক্ত দাম নেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাই সংশ্লিষ্টদের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার করার আহ্বান জানান।
এদিকে বাজারে ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি হালি ব্রয়লার মুরগির ডিম ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি হাঁসের ডিম ৪০ টাকা থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে ব্রয়লার মুরগির একশ ডিম ৭৫০ টাকায় এবং হাঁসের ডিম ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম (সাদা) ১৬০ টাকা থেকে ১৬৫ টাকায়, ব্রয়লার মুরগি (লাল) ১৭০ টাকা থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৩৮০টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী পাইকারি কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের নেতা হাজি আতাউর রহমান বলেন, ‘বাজারে গত সপ্তাহ থেকে শীতকালীন পণ্য উঠছে। প্রথম দিকে দাম বাড়তি থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে এখন অনেকটা হাতের নাগালে’।
তিনি আরো বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পণ্য পুরোদমে আসতে থাকলে এখন যে ফুলকপি পাইকারি ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তার দাম ২ থেকে ৩ টাকায় চলে আসবে। তখন বাজারে ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
মন্তব্য চালু নেই