কথা না শোনার শাস্তি মুখে আলকাতরা!
ভারতের মুম্বাইতে দেশটির উগ্রপন্থী হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার কর্মীরা বিজেপির সাবেক নেতা সুধীন্দ্র কুলকার্নির মুখে কালি ও আলকাতরা মাখিয়ে তাঁকে হেনস্তা করেছেন।
পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ মাহমুদ কাসুরির উপস্থিতিতে তাঁর লেখা একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক ছিল অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন নামের একটি থিঙ্কট্যাঙ্ক। মুম্বাইতে ওই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সুধীন্দ্র কুলকার্নি। এই কারণে সুধীন্দ্রর মুখে আলকাতরা মাখিয়ে দেন পাকিস্তানবিদ্বেষী সংগঠন শিবসেনার কর্মীরা। খবর এনডিটিভি ও বিবিসি।
শিবসেনা সুধীন্দ্রর ওপর এই আক্রমণের নিন্দা করেনি। উল্টো আত্মপক্ষ সমর্থন করে সংগঠনের পক্ষ থেকে এই হামলাকে ‘অহিংস, গণতান্ত্রিক ও ঐতিহাসিক’ প্রতিবাদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ মাহমুদ কাসুরির ‘নাইদার এ হক নর এ ডাভ: অ্যান ইনসাইডার অ্যাকাউন্ট অব পাকিস্তানস ফরেন পলিসি’ বইটি গত সপ্তাহে দিল্লিতে প্রকাশ করা হয়। আজ সোমবার মুম্বাইয়ের নেহরু সেন্টারে বইটি প্রকাশ অনুষ্ঠান করা হবে বলে কয়েক দিন আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়।
পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুরশিদ মাহমুদ কাসুরির একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজক হওয়ায় বিজেপির সাবেক নেতা সুধীন্দ্র কুলকার্নির মুখে কালি ও আলকাতরা মাখিয়ে দেয় দেশটির হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার কর্মীরা। পরে সুধীন্দ্র কুলকার্নি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: রয়টার্স
মহারাষ্ট্রের উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার দাবি ছিল কাসুরিকে নিয়ে ওই অনুষ্ঠান বাতিল করতে হবে। কিন্তু আয়োজকেরা সেই দাবি মানতে রাজি হননি। এরই ‘শাস্তি’ হিসেবে সুধীন্দ্রর ওপর আক্রমণ করা হয়।
শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার চালাচ্ছে। শিবসেনার বক্তব্য ছিল, পাকিস্তান যতদিন পর্যন্ত ভারতে সন্ত্রাসবাদে মদদ দেবে ততদিন তাদের সঙ্গে কোনো স্তরেই কোনো সম্পর্ক রাখা যাবে না।
শিবসেনার দাবির মুখে গত সপ্তাহেই মুম্বাইতে পাকিস্তানি গজলশিল্পী ওস্তাদ গুলাম আলির কনসার্ট বাতিল করতে হয়েছিল।
মুখে আলকাতরা মাখানোর পর সুধীন্দ্র কুলকার্নি ওই অবস্থাতেই খুরশিদ কাসুরির সঙ্গে মিলে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে কাসুরির সঙ্গে বসে তিনি বলেন, অনুষ্ঠান বাতিল করা হবে না।
সুধীন্দ্র বলেন, আজ সকাল ১০টার দিকে শিবসেনার কয়েকজন বিক্ষোভকারী তাঁর গাড়ি থামিয়ে তাঁর মুখে কালো রং ও আলকাতরা মাখিয়ে দেন। সুধীন্দ্রর ভাষ্য, ওই বিক্ষোভকারীরা তাঁকে জানিয়ে দেন, শিবসেনার কথা না শুনলে এভাবেই হেনস্তা হতে হয়।
শিবসেনার পক্ষ থেকে পরে এই ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়ে বলা হয়েছে এর মধ্যে তাঁরা অন্যায় কিছু দেখছেন না।
বিজেপির প্রবীণ রাজনীতিক লালকৃষ্ণ আদভানি এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘কারও মতাদর্শের সঙ্গে আপনি একমত না হতেই পারেন। তাই বলে অসহিষ্ণুতা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’
এর প্রতিক্রিয়ায় শিবসেনা বলেছে, সব বিষয়ে নাক গলানোর বয়স আদভানির এখন আর নেই।
মন্তব্য চালু নেই