এবার পাঠ্যবইয়ে উনের জীবনী
জীবিত কোন নেতার জীবনী পাঠ্যবইয়ে অর্ন্তভূক্ত করার ঘটনা বেশ বিরল। সেই নেতা যদি বয়সে তরুণ হন তাহলেতো কোন কথাই নেই। সেই বিরল ইতিহাসে এবার নিজের নামি লিখিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন । শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার এক চ্যানেল দাবি করেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে উত্তর কোরিয়ার স্কুল পাঠ্যক্রমে ‘বিস্ময়বালক’ উনের মাহাত্ম্য যোগ করা হয়েছে। কীভাবে মাত্র তিন বছর বয়সে দক্ষ চালক হয়ে উঠেছিলেন তিনি, নয় বছরে নৌপ্রতিযোগিতা জিতেছিলেন— এ সবেরই আখ্যান থাকবে সেই অবশ্যপাঠ্য বিষয়ে।
দক্ষিণ কোরিয়ার চ্যানেলটির দাবি, এই নয়া কৌশলের পিছনে একটাই উদ্দেশ্য উনের। তা হল, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে প্রশ্নহীন আনুগত্য তৈরি করা। শিক্ষক-শিক্ষিকারা তো বটেই, পড়ুয়ারাও যাতে ছেলেবেলা থেকে উত্তর কোরিয়ার এই স্বৈরতন্ত্রী প্রশাসকের ব্যাপারে অনুগত থাকেন, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ। বিষয়টি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি উত্তর কোরিয়া। ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার ওই চ্যানেলের দাবির সত্যতা যাচাই করার সম্ভাবনাও নেই।
টিভি যে সব তথ্য তারা পেশ করেছে, তাতে চোখ কপালে উঠছে অনেকেরই। এতো রূপকথাকেও হার মানায়!
উত্তর কোরিয়ার পড়ুয়াদের শেখানো হচ্ছে, তাদের রাষ্ট্রপ্রধান রাজনীতির আঙিনায় দক্ষ তো বটেই, পাশাপাশি ছবি আঁকাতেও সমান পটু। আবার তিনি সুরস্রষ্টাও বটে। একই সঙ্গে অকূল সমুদ্রে দক্ষ নাবিকের মতো ভেসে বেড়ানোর ক্ষমতাও তাঁর জন্মগত। নয়া বিষয়টির জন্য যে পাঠ্যবই প্রকাশ করেছে প্রশাসন, তাতে বলা হয়েছে, ‘মাত্র নয় বছর বয়সে একটি বিদেশি ইয়ট কোম্পানির প্রধানের সঙ্গে নৌকো প্রতিযোগিতায় জিতেছিলেন উন।’ সব মিলিয়ে উত্তর কোরিয়ার এই শাসককে ‘বিস্ময়বালক’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ওই নয়া পাঠ্যবইয়ে। কী ভাবে বিষয়টি পড়ানো হবে, তা নিয়ে চলতি শিক্ষাবর্ষে বিস্তারিত নিয়মাবলি পাঠানো হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
সমালোচকেরা অবশ্য এর মধ্যে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ যে উনের প্রতি অনুগত নন, এই পদক্ষেপ তারই প্রমাণ। সেই আনুগত্য তৈরি করতেই এবার স্কুলেও নিজের মাহাত্ম্য প্রচারের বন্দোবস্ত করতে হচ্ছে উনকে।
মন্তব্য চালু নেই