এবার ট্রেনে বন্ধ হতে চলছে সেলফি তোলা!

ট্রেন ও লাইন চত্বরে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার উপর এবার নিয়ন্ত্রণ চায় রেল পুলিশ৷ তবে এজন্য কী আইন রয়েছে বা সেটা থাকলেও প্রয়োগ কীভাবে করা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তাই আপাতত মানুষজনকে সাবধান করে ঘনঘন প্রচার চালানোর পরিকল্পনার কথা ভাবছে রেল৷ গত বৃহস্পতিবার লিলুয়া-বেলুড়ের মাঝে ট্রেনের ধাক্কায় চার যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনাটিই রীতিমতো টনক নাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসনের৷ শুক্রবার রেল পুলিশ ও আরপিএফ এই নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অ্যাড্রেস সিস্টেম মারফতে যাত্রী ও সাধারণ মানুষজনকে সতর্ক করা হবে, ট্রেন বা লাইন পারাপারের সময় মোবাইল ব্যবহারে সতর্কতার পাশাপাশি সেলফি তোলার ঝুঁকি নিতে নিষেধ করা হবে৷ এই বিষয়ে হাওড়া রেল পুলিশ সুপার নীলাদ্রি চক্রবর্তী বলেন, বারবার সতর্কতামূলক প্রচারে কিছুটা সচেতন করা যাবে যাত্রী ও সাধারণ মানুষজনকে৷

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ মহাপাত্র বলেন, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে সেলফি তুললে তাঁকে ধরা হবে৷ যদিও তেমন আইন রেলের ঘরে নেই বলে রেল পুলিশ ও আরপিএফ জানিয়েছে৷ তবে রেল আইনের ১৪৭ ধারায় ট্রেসপাসারস বলে চিহ্নিত করার আইন রয়েছে৷ লাইন পারাপারে ধৃতদের এই আইনের আওতায় রাখা হয়৷ সেক্ষেত্রে লাইনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুললে এই আইনে গ্রেপ্তার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন, সিনিয়র কমান্ডাণ্ট সৌরভ ত্রিবেদী৷ তবে এই আইনের অবমূল্যায়ন এখন যেমন হচ্ছে, সেলফি ম্যানিয়াকদের ধরতেও তেমনিভাবে ব্যবহার হবে৷ স্বার্থান্বেষী এক শ্রেণির আরপিএফ নিজেদের আমদানির স্বার্থে লাইন পারাপার করলেই তাঁকে ধরে এই আইনে ফাঁসিয়ে মহুরির মাধ্যমে মোটা টাকা আদায় করে৷ এক্ষেত্রেও আইনের অপব্যবহার হবে বলে মনে করছেন আরপিএফের আধিকারিকদেরই অনেকেই৷ তবে সচেতন করার মতো প্রচারে কাজ হবে বলে মনে করেছেন রেল কর্তারা৷

তাঁদের কথায়, মুম্বইতে চলন্ত ট্রেনে স্ট্যান্টবাজি রেওয়াজ হয়ে উঠেছিল৷ বহু কিশোর মারাও গিয়েছিল এই কারণে৷ এর পর সতর্কতার প্রচারের ফলে তা কমতে শুরু করে৷ এখানেও তেমনই পদক্ষেপ চায় রেল পুলিশ৷ এদিকে, বেলুড়-লিলুয়ার মাঝে ট্রেনের ধাক্কায় চারজনের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে সেলফির সম্পর্ক নেই বলে স্পষ্ট করেছে রেল পুলিশ৷ ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে মৃত দমদমের তিনজন তারকেশ্বর থেকে ফিরছিল৷ বন্ধুরা বালিতে নামলেও চারজন লিলুয়ায় গিয়ে নামে৷ লাইন ধরে তাঁরা বেলুড়ের দিকে আসার সময় গোঘাট লোকালের ধাক্কায় মারা যান তিনজন৷ অপর একজনের হাত কেটে যায়৷ সিএমসিতে এদিন তাঁর অপারেশন হয়েছে৷

রেল পুলিশ জানিয়েছে, বেঁচে থাকা তারকেশ্বর মাকালকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে কেন তাঁরা লাইন ধরে বেলুড় আসছিলেন৷ অন্য দিকে ট্রেন থেকে মোবাইল পড়ে যাওয়ার পর ঝাঁপ দেওয়া যুবক বৈদ্যনাথ দুবের মৃত্যু হয় হাসপাতালে৷ লিলুয়াতে রেলের জমিতে পার্ক, সৌন্দর্যায়নে যে জেসিবি মেশিন ব্যবহার হচ্ছিল সেটি চালাত বৈদ্যনাথ৷ বৃহস্পতিবার লিলুয়া থেকে বৈদ্যবাটির বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি৷ একই দিন বিকেলে প্রায় একই জায়গায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় জখম প্রদীপ শর্মার অবস্থার উন্নতি হয়েছে৷ তাঁকে জয়সওয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷



মন্তব্য চালু নেই