এক সন্তানের তিন বাবা-মা!

এক সন্তানের তিন বাবা-মা! এখনো এমন সন্তানের জন্ম হয়নি পৃথিবীতে। তবে এর পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যুক্তরাজ্যের চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। আইনগত অনুমোদন পেলে তিনজনের ডিএনএ থেকে জন্ম নেবে একটি সন্তান।

এমন সন্তান জন্ম দেওয়ার আইনগত বৈধতার বিষয়টি এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে ধর্মীয় গোষ্ঠীসহ সব মহলে চরম বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্টে গড়িয়েছে। এই নিয়ে দেশটির হাউস অব কমন্সে আজ মঙ্গলবার ভোটাভুটি হচ্ছে।

দুই নারী ও এক পুরুষের ডিএনএ নিয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার পক্ষে হাউস অব কমন্স ভোট দিলে যুক্তরাজ্য হবে ‘তিন বাবা-মা থেকে এক সন্তান’ নীতির প্রথম দেশ।

মায়ের কাছ থেকে সন্তানের দেহে জিনগত জটিল রোগের সংক্রমণ ঠেকাতেই এই পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছেন ব্রিটিশ চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।

ধারণা করা হচ্ছে, এই কৌশল থেকে বছরে ১৫০টির মতো দম্পতি লাভবান হতে পারেন।

সন্তান জন্ম দেওয়ার এমন প্রস্তাব যুক্তরাজ্যে তীব্র নৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। চার্চের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা এই উদ্যোগ আটকে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে হাউস অব কমন্সে যদি আজ এই প্রস্তাব পাস হয়, তাহলে আগামী বছরের কোনো এক সময় এ রকম ‘তিনজনের এক শিশু’র জন্ম হতে পারে।

ব্রিটেনে জেনেটিক রোগের কারণে অনেকেই তাদের সন্তানদের হারাচ্ছেন। এ রকম একজন মা মাইটোকন্ড্রিয়াল অসুখের কারণে তার সাত সন্তানকেই হারিয়েছেন। ওই সাত শিশু এই রোগটি তাদের মায়ের জিন থেকে পেয়েছিল।

মাইটোকন্ড্রিয়া হচ্ছে দেহকোষের ভেতরে ক্ষুদ্র একটি জটিল উপাদান, যা খাদ্য থেকে মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি তৈরি করে।

ত্রুটিপূর্ণ মাইটোকন্ড্রিয়ার কারণে মস্তিষ্কজনিত রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে। এই ত্রুটিপূর্ণ মাইটোকন্ড্রিয়া শুধু মায়ের কাছ থেকেই সন্তানের শরীরে আসে।

এই কৌশল হচ্ছে উন্নত ধরনের আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন), যেখানে বাবা-মায়ের ডিএনএর সঙ্গে আরেকজন সুস্থ নারীর ডিএনএ থেকে সংগৃহীত মাইটোকন্ড্রিয়া একসঙ্গে যুক্ত হয়। দীর্ঘ গবেষণার পর নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন।

ব্রিটিশ সরকার এই পদ্ধতিকে নীতিগতভাবে সমর্থন দিচ্ছে কিন্তু প্রভাবশালী ধর্মীয় ব্যক্তিরা এর জোরালো বিরোধিতা করছেন। এখন সবকিছু নির্ভর করছে হাউস অব কমন্সের ওপর।

তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন।



মন্তব্য চালু নেই