ইরানের পরমাণু ইস্যুতে মোসাদ-নেতানিয়াহু মতবিরোধ

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। সম্প্রতি আলজাজিরার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে যা গার্ডিয়ানেও প্রকাশ করা হয়েছে।
২০১২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ কাজ এগিয়ে গেছে। দ্রুত তাদের এ কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে দেশটি পরবর্তী এক বছরের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ করে ফেলবে।
নেতানিয়াহুর এ বক্তব্যের কিছুদিন পরই ওই বছরের ২২ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে একটি প্রতিবেদন লেনদেন করে মোসাদ যা আলজাজিরার হস্তগত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, ‘পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণের মতো কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি ইরান।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, ‘ইরানের বিজ্ঞানীরা আইনসঙ্গতভাবে পরমাণু সমৃদ্ধকরণের বিষয়ের ফাঁকগুলো নিয়ে কাজ করছে।’
তবে অনেক কার্যক্রম এমন ছিল যা পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনের ক্ষেত্রে সময় বাঁচাবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, ইরানের কাছে ১০০ কিলোগ্রাম ইউরেনিয়াম আছে এবং তারা ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে।
মোসাদের এ তথ্যের বিরোধিতা করে নেতানিয়াহু ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংসাত্মক বলে জাতিসংঘে তুলে ধরেছিলেন। এমনকি কার্টুন ছবি আঁকিয়ে ইরানের সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের অগ্রগতির ‘কাল্পনিক’ ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন তিনি।
এরই রেশ ধরে পরবর্তী সময়ে বিশ্বের শক্তিধর ছয় রাষ্ট্র (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন ও জার্মানি) ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনায় বসে ও চাপ সৃষ্টি করে। বিষয়টি নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে।
ইরানের পক্ষ থেকে অবশ্য বরাবরই বলা হচ্ছে, শান্তিপূর্ণ উপায়েই পারমাণবিক কর্মসূচি চালাচ্ছে তারা।
মোসাদের সঙ্গে নেতানিয়াহুর মতবিরোধের ঘটনার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল ২০১২ সালের শুরু দিকেই। ওই বছরের মার্চে এক সাক্ষাৎকারে মোসাদের প্রধান মেইর দাগান ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে গোয়েন্দা সংস্থাটির সঙ্গে নেতানিয়াহুর মতবিরোধের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
মন্তব্য চালু নেই