ইরানি হামলায় ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ডামি মার্কিন রণতরী

গর্জে উঠল রকেট, বন্দুক থেকে বেরিয়ে গেলো ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি আর ইরানি নৌবাহিনীর ডজনখানের বেশি স্পিডবোট যুক্তরাষ্ট্রের একটি ডামি রণতরীতে আঘাত হানল।

বুধবার ইরানি সামরিক বাহিনী কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ পারস্য উপসাগরে বিশালাকারের যে নৌ মহড়া চালিয়েছে তার একটি অংশ এটি।

ইরানি এলিট রিপাবলিকান গার্ডের এই মহড়া সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমাদের সাথে ঐতিহাসিক চুক্তিতে উপনীত হওয়ার শেষলগ্নে ইরান এই মহড়া চালাল।

ইরানের সামরিক মহড়া বিরল কোনো ঘটনা নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নৌশক্তির চূড়ান্ত শৌর্যবীর্যে আঘাত করে ইরান এই বার্তা দিতে চেয়েছে যে মার্কিন চাপের কাছে নতিস্বীকারের কোনো ইচ্ছাই নেই তেহরানের।

মহড়া শেষে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র সিনিয়র কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আলী ফাদাভি বলেছেন, হুমকি সৃষ্টি হলে পারস্য উপসাগরে ইরানি নৌবাহিনী মার্কিন বিশালাকারের যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দিতে সক্ষম।

রাষ্ট্রীয় টিভিতে তিনি যখন এ বক্তব্য রাখেন তখন দেখা যায় যে রণতরীতে দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় যে নকল রণতরীটি ডুবে যায়নি। তবে সেটি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে ফাদাভি বলেন, এই মহড়া ইরানের শক্তিমত্তা সম্পর্কে বহির্শক্তির প্রতি একটি বার্তা।

তিনি আরো বলেছেন, যদি ভবিষ্যতে আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধও হয় তাতে মার্কিন নৌবাহিনী পরিচালিত যুদ্ধজাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো ইরানের পক্ষে কোনো কঠিন কাজ নয়।

‘মহানবী (স)-৯’ নামের এ মহড়া থেকে ১০৭ মিলিমিটার আকৃতির ৪০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে বিশালাকারের কল্পিত মার্কিন বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা হয়। এর মাধ্যমে সম্ভাব্য যুদ্ধে আইআরজিসি’র সক্ষমতা ফুটে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন আলী ফাদাভি।

223

সাক্ষাৎকারের তিনি মহড়ার মূল বার্তা তুলে ধরে বলেন, ইরান এর মাধ্যমে প্রতিবেশিদের জন্য আশ্বাস এবং শত্রুদের জন্য ত্রাসের বাণী পৌঁছে দিতে চায়।

ইরানের এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের শত্রুদেরকে এ কথা মনে রাখা উচিত যে, তারা কখনো কোনো যুদ্ধে ইরানের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে পারবে না। এর পাশাপাশি আমাদের বন্ধুরা ইরানের সক্ষমতা এবং আইআরজিসি-কে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে।

আলী ফাদাভি বলেন, পারস্য উপসাগরে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতির কারণে এ অঞ্চলে জাহাজ ও নৌযানে হামলার ঘটনা বেড়েছে অথচ তারা যদি এ অঞ্চলে না থাকতো তাহলে হামলা অন্তত আটগুণ কমে যেত।

ফাদাভি গত মাসে গর্ব করে বলেছিলেন যে যুদ্ধ হলে তার বাহিনী মার্কিন রণতরী ডুবিয়ে দিকে সক্ষম। তিনি বলেছেন, রণতরী হল সহজ টার্গেট এবং ইরান স্বাভাবিকভাবেই এগুলো ডুবিয়ে দিতে চায়।

যুক্তরাষ্ট্র উপগাগরীয় অঞ্চলে পালাক্রমে অন্তত একটি বিমানবাহী রণতরী এবং অন্যান্য যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন রাখে।

বর্তমানে মার্কিন রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন এবং ফরাসি রণতরী চার্লস দা গল উপসাগরীয় অঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে।

এই রণতরী থেকে ইরাক ও সিরিয়ার সু্ন্নীপন্থী সশস্ত্র সংগঠন ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে নিয়মিত বিমান হামলা চালানো হয়।

সূত্র: এপি, প্রেস টিভি



মন্তব্য চালু নেই