লতিফ ইস্যুতে :
আবারও কী আসছে ৫ মে? (ভিডিও)
লতিফ সিদ্দিকী ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে হেফাজতে ইসলাম আবারো তাণ্ডব চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জনগণ। সোমবার জোহরের নামাজের পর হঠাৎ করেই বায়তুল মোকাররমের সামনে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় তারা পুলিশের বেরিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। এতে রাস্তার দুপাশের যান চলাচল ও দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করেন।
মিছিলের সময় দেখা গেছে, সাধারণ পথচারীরা ভয়ে সামনের দিকে যেতে চাচ্ছেন না। তারা সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান, আবারো কি হেফাজত মাঠে নেমেছে? তারা কি কাউকে না বলেই রাস্তায় নেমেছে? পুলিশ কি আগে থেকে তাদের ব্যাপারে জানত না? পুলিশ কেন তাদের রাস্তায় নামতে দিল?
গত বছরের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডব দেখেছেন রাজধানীবাসী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে হেফাজতের দিনভর সংঘর্ষ হয়। বায়তুল মোকাররমের চারপাশে শতশত দোকান পুড়ে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধার মুখে তারা মতিঝিল ছাড়তে বাধ্য হয়।তখন থেকেই সংগঠনটি অনেকটা কোনঠাসা হয়ে রয়েছে। ছোটখাটো সভা-সমাবেশ করেই দিন পার করছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর লতিফ সিদ্দিকী যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে তাবলীগ, হজ সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করায় আবারো সক্রিয় হয় হেফাজত। একের পর এক তারা বিভিন্ন কর্মসূচি দিতে থাকে। গতকাল লতিফ সিদ্দিকী হঠাৎ করে কলকাতা থেকে দেশে ফেরায় আবারো সক্রিয় হচ্ছে হেফাজত। সংগঠনটি বিবৃতিতে বলেছে, তাকে গ্রেফতার করা না হলে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সোমবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে হেফাজত সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।এক পর্যায়ে পুলিশের বাধা পেরিয়ে তারা পল্টন মোড়ের দিকে এগিয়ে যায়। এরই মধ্যে বিক্ষোভ মিছিলে এসে যোগ দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও ইসলামী ঐক্যজোট বাংলাদেশ। পুরো পল্টন এলাকা মিছিলে মিছিলে সরগরম হয়ে ওঠে। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ এসে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী দলগুলো কর্মসূচি ঘোষণা করে বায়তুল মোকাররম এলাকা থেকে সরে যায়। হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর আহবায়ক আল্লামা নুর হোসাইন কাশেমী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে হেফাজত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসুচি ঘোষণা করবে। সে ক্ষেত্রে দলের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে পরামর্শ করবেন তারা। এ ছাড়া হেফাজতে ইসলাম আগামী বুধবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করবে। সংবাদ সম্মেলনে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে বলে জানান নেতারা।
ইসলামী ঐক্যজোট সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে আগামী বৃহস্পতিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। এ ছাড়া তারা বুধবার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করবে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ কোনো কর্মসূচি ঘোষণা ছাড়াই পল্টন এলাকা ত্যাগ করে।
আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন আগামী ৫ ডিসেম্বর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশের ডাক দেন। সমাবেশ শেষে ওই দিন সংসদ অভিমুখে যাত্রা করবে সংগঠনটি।জাতীয় সংসদ ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবে।
পুলিশ বলছে, এদের আন্দোলনের ধরণ দেখে মনে হচ্ছে, আবারো তারা ৫ মে’র মতো নাশকতার চেষ্টা চালাবে। তবে পুলিশ কোনোভাবেই তাদের এ কর্মসূচি সফল হতে দেবে না। মিছিলে তাদের শ্লোগান উদ্ভট প্রকৃতির ছিল। তারা প্রধানমন্ত্রীকেও বিভিন্ন গালি-গালাজ করেছে।
এদিকে আজ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন পল্টন এলাকায় উপস্থিত থাকলেও, তাদের আগে থেকে তেমন কোনো প্রস্তুতি ছিল না। এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
পুলিশের মতিঝিল জোনের এডিসি সানোয়ার জানান, তারা মৌখিকভাবে অনুমতি নিয়েছে। সাধারণভাবে ছোটখাটো আকারে একটি সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ মিছিল করার কথা ছিল। কিন্তু একই সময়ে সবাই এসে এক কাতারে দাঁড়াবে তা জানা ছিল না। এরপর বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করা হবে।
https://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=XoDWFxTJvYY
মন্তব্য চালু নেই