‘আপনি রোহিঙ্গা হলে কোথায় যেতেন?’
ছোট্ট একটা প্রশ্ন। কিন্তু তার গভীরতা অনেক। এমন এক প্রশ্ন শুনে থমকে যান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কিছুক্ষণ ভেবে উত্তর দেন তিনি। তবে এককথায় নয়, বিশদভাবে উত্তর দেন প্রেসিডেন্ট।
বিশ্বের বাঘা রাজনীতিক, নামী সাংবাদিক সবার প্রশ্ন মোকাবেলা করছেন নিয়মিত। তবে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে করা পেনসিরি বাংসিরি নামে এক থাই তরুণীর প্রশ্নে হকচকিয়ে যান ওমাবা। ইয়ং সাউথইস্ট এশিয়ান লিডারস ইনিশিয়েটিভ ফেলোস প্রোগ্রামে এই নবীন গবেষক প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন- ‘আপনি রোহিঙ্গা হলে কোথায় বাস করতে পছন্দ করতেন এবং কেন?’
থাইল্যান্ড ও এর আশপাশের অঞ্চলে মানবপাচারের বিরুদ্ধে কাজ করা এই নারীর প্রশ্ন শোনার পর বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন ওবামা। বেশ কিছুক্ষণ ভাবার পর তিনি বলেন, ‘এটা খুবই হৃদয়গ্রাহী প্রশ্ন। আমাকে বিস্তারিত বলতে দিন। এর মধ্যে আমি আপনার প্রশ্নের উত্তর দেব।’
এ সময় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার হওয়া এবং এ কারণে পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশটির সরকারকে বার বার চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ওবামা।
এর পর তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমি যদি রোহিঙ্গা হতাম তাহলে আমি আমার জন্মভূমিতেই থাকতে চাইতাম। আমার বাবা-মা যেখানে বাস করেছে আমি সেখানেই থাকতে চাইতাম। কিন্তু আমাকে নিশ্চিত হতে হতো যে, আমার সরকার আমাকে নিরাপত্তা দেবে। লোকজন আমার সঙ্গে নিরপেক্ষ আচরণ করবে। এটাই আমি চাইতাম।’
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করা হবে (মিয়ানমারের) গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়ায় ইস্যুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সমুদ্রে ভাসমান রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে ওবামা জানান, তিনি মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া সরকারকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রও বেশকিছু শরণার্থীকে আশ্রয় দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে ওবামা ইন্দোনেশিয়ায় থাকাকালীন তার অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। ওই সময় চীনবিরোধী দাঙ্গায় চীনা-ইন্দোনেশীয়দের ওপর সহিংসতা চালানো হয় বলে জানান তিনি। এ ছাড়া ইউরোপে ইহুদীদের অত্যাচারিত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন ওবামা।
রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সরকারের বৈষম্যবাদের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ধর্ম ও বর্ণের বিভাজন ঘটিয়ে কোনো দেশ সফল হতে পারবে না।’ তথ্যসূত্র : ব্যাংকক পোস্ট।
মন্তব্য চালু নেই