আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগীতায় চ্যাম্পিয়ন জাবি

শাহিনুর রহমান শাহিন, জাবি প্রতিনিধি: “চোখ মেলে দেখি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটি ২০১৬ সালের পহেলা জানুয়ারী যাত্রা শুরু করে।

চট্রগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) অনুষ্ঠিত প্রথম আলো জয়ধ্বনি ৩য় শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের সম্মান পেয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্র রিসান আহমেদেও নির্মিত চলচ্চিত্র “ইল্যুশন”।

এই উৎসবে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছে রিসান আহমেদের আরেকটি চলচ্চিত্র “লিভিং ডলস”। চলচ্চিত্র দুইটি জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটি (জেসিএস) এর নিয়মিত কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে নির্মিত।

গত ৩০শে এপ্রিল থেকে ১লা মার্চ পর্যন্ত চুয়েট ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক সংগঠন জয়ধ্বনি আয়োজিত তৃতীয় আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৭। এই উৎসবের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করে দেশের সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নির্মিত শতাধিক চলচ্চিত্র। গত ৩১শে মার্চ চুয়েট অডিটোরিয়ামে প্রদর্শিত হয় সেরা দশটি চলচ্চিত্র। এরপর ১লা এপ্রিল পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে ঘোষনা করা হয় ইল্যুশন এর নাম। উৎসবে বিশেষ সম্মাননা পায় জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটিরই আরেকটি চলচ্চিত্র “লিভিং ডলস”।

উৎসবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে যথাক্রমে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আল রিয়াদের চলচ্চিত্র ‘পুতুল নাচ‘ এবং আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাব্বির আহমেদের চলচ্চিত্র ‘প্রতিদান‘।

এই চলচ্চিত্র প্রতিযোগীতার বিচারক ছিলেন চুয়েটের আর্কিটেকচার বিভাগের লেকচারার ও চুয়েট ফিল্ম সোসাইটির মডারেটর শায়লা শারমিন।
পুরষ্কার পাওয়ার পর জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা ড. কবিরুল বাশার বলেন, “আমার স্বপ্নে গড়া সংগঠন পুরষ্কার পাওয়ায় আমি আবেগে আপ্লুত ও আনন্দিত। যারা পুরষ্কার পাচ্ছে তাদের আরো ভালো কাজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক পুরষ্কারও দেশে আনতে হবে”।

চলচ্চিত্র দুইটির পরিচালক রিসান আহমেদ তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, “যেহেতু এটা আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগীতা ছিলো তাই আমার সুযোগ হয়েছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করার। এটা আসলে অনেক বড় প্রাপ্তি। আমি এই পুরষ্কার আমার বাবাকে উৎসর্গ করছি। তিনি না থাকলে কখনই আমার এতটা পথ পাড়ি দেয়া হতো না”।

ইল্যুশন আমার নিজের নির্মিত সবচেয়ে পছন্দের চলচ্চিত্র। আমরা এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রকৃতি ধ্বংসের যে নিষ্ঠুরতা বিরাজ করছে তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চেয়েছি”।

১ম পুরষ্কার প্রাপ্ত ৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের নির্বাক চলচ্চিত্র “ইল্যুশন” এ বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মেহেদী হাসান মুন্না ও নাজমুস সাকিব রুবেল।

বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্ত চলচ্চিত্র “লিভিং ডলস” এ বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আমরিন তৃষা, রেফাত হাসান সৈকত ও নাজমুস সাকিব রুবেল।

উভয় চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহন করেছেন মাজহারুল ইসলাম সৈকত। সহকারী পরিচালনায় ছিলেন কাজল ইসলাম। রচনা, সম্পাদনা ও পরিচালনা করেছেন রিসান আহমেদ।

“লিভিং ডলস” এর আগে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস এন্ড ট্রাস্ট আয়োজিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রতিযোগীতায় সারাদেশ থেকে অংশগ্রহন করা ১১৭ টি চলচ্চিত্রের মধ্যে সেরা চলচ্চিত্রের সম্মান পেয়েছিল।

উল্লেখ্য, সংগঠনটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক অসংগতি ও সমস্যা নিয়ে পনেরটির বেশি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছে। বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে এসব চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রানীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার এবং উপদেষ্টা হিসেবে আছেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামীম রেজা।



মন্তব্য চালু নেই