আনন্দবাজার গোষ্ঠী ৪০ ভাগ কর্মী ছাঁটাই করবে

ভারতের জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী আনন্দবাজার পত্রিকা (এবিপি) গোষ্ঠী ৪০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিগগিরই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। দেশটির সংবাদমাধ্যম কুইন্ট-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

কুইন্ট বলছে, নরেন্দ্র মোদি সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের প্রভাব পড়ছে ভারতের গণমাধ্যম বাজারে। সরকার সম্প্রতি কালোটাকার দৌরাত্ম্য কমাতে ১ হাজার ও ৫০০ রুপির নোট বাতিল করেছে। নোট বাতিলের প্রভাব পড়েছে দেশটির গণমাধ্যমে। বিজ্ঞাপনের পরিমাণ কমে গেছে। এর জেরে দেশটির পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা ও ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ সংবাদকর্মী ও সাধারণ কর্মী ছাঁটাই করছে। কর্মীদের অনানুষ্ঠানিকভাবে এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গত বুধবার এবিপি গোষ্ঠী এক নোটিশে বলেছে, যেসব সাংবাদিকের আর প্রয়োজন নেই, তাঁরা ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস অ্যাক্ট অনুযায়ী অবসরের সময় পর্যন্ত মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ পাবেন। ওয়েজ বোর্ডের আওতাধীন সাংবাদিকদের ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে।

এ ব্যাপারে জানার জন্য কুইন্টের পক্ষ থেকে এবিপি গ্রুপ অ্যাসোসিয়েটের ভাইস প্রেসিডেন্ট (মানবসম্পদ) শিউলি বিশ্বাসের সচিবের কাছে বারবার ফোন করা হয়েছে। তবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। এমনকি শিউলি বিশ্বাসের কাছে ই-মেইল করা হলেও তিনি এর কোনো উত্তর দেননি।

কুইন্ট বলছে, এবিপি গোষ্ঠী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি কত কর্মী ‘সোনালি করমর্দনের’ সুবিধা পাবেন। তবে সংখ্যাটি অনেক বেশি হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকা ও টেলিগ্রাফ-এর প্রধান সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন অভীক সরকার। অভীক সরকারের স্থলাভিষিক্ত হন তাঁর বড় ভাই অরূপ সরকার। অরূপ সরকারের ছেলে আদিদেব সরকারকে এবিপি গোষ্ঠীর নির্বাহী পরিচালক করা হয়। এসব পরিবর্তনের কয়েক মাসের মধ্যেই কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিল এবিপি গোষ্ঠী।

আনন্দবাজার পত্রিকা ও টেলিগ্রাফের সাংবাদিকেরা ব্যক্তিগতভাবে কুইন্টকে জানিয়েছেন, ব্যয়সংকোচন ও লোকসান কমানোর কৌশল বের করতে এবিপি গোষ্ঠী মার্কিন প্রতিষ্ঠান হে কনসালটেন্সি লিমিটেডকে দায়িত্ব দেয়। ছয় মাস পর্যবেক্ষণের পর সম্প্রতি মার্কিন এই প্রতিষ্ঠান এবিপি কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের সুপারিশগুলো জমা দেয়। সেখানে হে উল্লেখ করে, এবিপিতে সাড়ে ৪৭ শতাংশ কর্মী বেশি আছে। এরপরই কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্তের কথা জানাল।

১৯২২ সালে এবিপি গোষ্ঠীর আওতায় আনন্দবাজার পত্রিকা যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে বাংলা ট্যাবলয়েড এবেলা, ইংরেজি দৈনিক টেলিগ্রাফ, দেশ ও সানন্দাসহ আটটি সাময়িকী এবং এবিপি নামে বিভিন্ন ভাষার ছয়টি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে তাদের।



মন্তব্য চালু নেই