আইএসের ভিডিও দেখে মাকে জবাই করে প্রেমিকযুগল কারাগারে

আইএসের শিরচ্ছেদের ভিডিও দেখে মাকে জবাই করার অপরাধে এক ব্রিটিশ তরুণী ও তার প্রেমিককে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এ ঘটনায় ওই তরুণীকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আর প্রেমিককে দেয়া হয়েছে ১৩ বছরের সাজা।

লিসা বোর্চ নামের ১৫ বছরের ওই তরুণী গত বছরের অক্টোবরে কয়েক ঘণ্টা ধরে ইউটিউবে ডেভিড হেনিস এবং অ্যালেন হেনিংয়ের শিরচ্ছেদের ভিডিও দেখে এ কর্মকাণ্ড ঘটান। এরপর তিনি তার প্রেমিক বখতিয়ার মোহম্মেদ আবদুল্লাহ(২৯) মিলে তার রান্না ঘরের ছুরি দিয়ে ২০ বার আঘাত করে কিভিসেলে হত্যা করেন।

প্রেমিকের সহায়তায় মাকে হত্যার পর পুলিশকে ফোন দিয়ে বলে, ‘আমি মায়ের চিৎকার শুনতে পেয়েছি এবং জানালা দিয়ে একজন সাদা চামড়ার মানুষকে পালিয়ে যেতে দেখেছি। তাড়াতাড়ি আসুন এখানে রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।’ এরপর পুলিশ সেখানে গিয়ে হোল্টেগার্ড নামের ওই নারীর শরীর রক্তে ভেজা দেখতে পান। তবে এ ঘটনার সময় ব্যবসার প্রয়োজনে বাহিরে ছিলেন হোল্টেগার্ডের স্বামী।

ফোনের এ নাটক সাজানোর পর পুলিশ গিয়ে দেখতে পায় ওই তরুণী তার শোবার ঘরে বসে তার ফোন চাপছে এবং ইউটিউবে ভিডিও দেখছে। পুলিশ যখন তার মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করে তখন বোর্চ বলে তার ঘর থেকে যেতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তার মায়ের ঘরটি দেখিয়ে দেন। এরপর পুলিশ তার কম্পিউটার পরীক্ষা করে দেখতে পায় তিনি বারবার দুই ব্রিটিশের শিরচ্ছেদের ভিডিও দেখছিলেন।

আদালতে রাষ্ট্র পক্ষের কুশুলী বলেন, আইএস তরুণের সাথে প্রেমের সম্পর্কের কারণে নিয়মিত ঝগড়া হতো মা ও মেয়ের। এ করণে ঘর ছাড়েন তার যমজ বোন। আর এ ঝগড়ার কারণেই প্রাণ দিতে মাকে। এরপর তারা সিরিয়াতে গিয়ে আইএসের হয়ে লড়াইয়ে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করছিলেন। তবে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বোর্চ।

আদালত মনে করছে, মেয়েকে আইএস তরুণের সাথে সম্পর্ক ভেঙ্গে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে বলায়ই বলি হতে হয় মাকে। তবে এ ঘটনার অপর অভিযুক্ত আবদুল্লাহ দাবি করেছেন তিনি শুধুমাত্র বোর্চ কে সহায়তার জন্য গিয়েছিলেন এবং তা খুনের ঘটনার পরে।

পুলিশ ঘটনাস্থলে আবদুল্লাহকে না পেলেও তার আঙ্গুলের ছাপ পেয়েছে। আদালত আবদুল্লাহকে ১৩ বছরের জেল দিয়েছে এবং সাজা শেষ হওয়ার পর ডেনমার্ক থেকে নির্বাসনের নির্দেশ দিয়েছে। তাদের দুজনকেই ৪০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ক্ষতিপূরণ ক্ষতিগ্রস্থের পরিবারকে দেয়া হবে।

বোনকে দেখতে বোর্চের যমজকে আদালতে দেখা গেলেও রায় ঘোষণার দিন তাকে দেখা যায় নি।



মন্তব্য চালু নেই