আইএসের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে পারেনি মার্কিন হামলা

মার্কিন নেতৃত্বধীন জোট সোমবার মধ্যরাত থেকে সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠ ইসলামি স্টেটের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করেছে। বুধবার রাতেও তারা আইএসের নিয়ন্ত্রণাধীন তেল শোধনাগারগুলোতে হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় ১৪ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

কিন্তু এসব হামলা কুর্দি এলাকায় আইএস যোদ্ধাদের অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি। ওই এলাকা থেকে পালিয়ে আসা কুর্দি শরণার্থীদের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।

স্থানীয় অধিবাসীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, তুরস্কের সীমান্তবর্তী  কুর্দি এলাকা কোবানিতে নিজেদের অগ্রযাত্রা জোরদার করেছে আইএস। তাদের হামলায় গত কয়েকদিনে ১ লাখ ৪০ হাজার কুর্দি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।ওই এলাকা ছেড়ে আসা কুর্দিরা বলছেন, জঙ্গিরা তাঁদের গ্রামের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং বন্দীদের শিরশ্ছেদ করছে।

বুধবার  মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে হামলা চালায়। তেলসমৃদ্ধ এই এলাকাটি আইএসের আয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে বিবেচিত।
কোবানির স্থানীয় অধিবাসীরা বলছেন, সিরিয়ায় মার্কিন বিমান হামলা শুরু হওয়ার পরও আইএসের তৎপরতা থামেনি। সিরিয়ায় উত্তরাঞ্চলের তুর্কী সীমান্তে হামলা শুরু করেছে আইএস। তারা কুর্দিদের শহর কোবানির দিকে এগিয়ে গেছে। সেখানে তারা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। কয়েকটি গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। অনেককে জিম্মি করেছে।

ইসলামি স্টেটের হাতে বিতাড়িত হামিদ নামের এক কুর্দি রয়টার্সকে বলেছেন,‘এসব বিমান হামলা কোনো গুরুত্ব বহন করে না। আমাদের প্রয়োজন স্থল সেনা।’ বুধবার কোবানি শহর ছেড়ে এসেছেন শিক্ষক মাজলুম বেরগাডেন। তিনি জানান, তার দুই ভাইকে ধরে নিয়ে গেছে আইএস যোদ্ধারা। তিনি বলেন,‘এখানকার পরিস্থিতি খুবই খরাপ। তারা লোকজনকে নির্বিচারে হত্যা করছে, তারা গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়ে সেগুলো পুড়িয়ে দিচ্ছে। গ্রামবাসীদের ভয় দেখানোর জন্য তাদের ফাঁসি দিচ্ছে।’

আলবু কামাল থেকে টেলিফোনে এক ইসলামি জঙ্গি জানায়, বুধবার কোয়ালিশন যোদ্ধারা(মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট)তাদের ওপর কমপক্ষে নয়বার হামলা চালিয়েছে। আলবু কালামের ভিতর দিয়েই ইরাক ও সিরিয়ায় নিজেদের দখলকৃত এলাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে থাকে ইসলামি স্টেট। দু দেশের মধ্যে যোদ্ধা এবং সমরাস্ত্র সরবরাহের সুযোগ পাওয়ার  কারণে যুদ্ধক্ষেত্রে তারা সুবিধাজনক স্থানে রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক তুর্কী কর্মকর্তা বলেছেন, গত তিন দিন আগে আইএস দ্রুত অগ্রসর হচ্ছিল। কিন্তু হামলা শুরু করার পর তাদের অগ্রযাত্রা ধীর হয়েছে।কিন্তু কুর্দি বাহিনীর উপনেতা ওকালান ইসো তার দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, মার্কিন বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর কোবানিতে আরো সেনা এবং ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে আইএস।



মন্তব্য চালু নেই