অভ্যুত্থানে এরদোয়ানই জড়িত, পাল্টা তোপ গুলেনের
তুরস্কের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসিত দেশটির ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লা গুলেন জানান, এটি প্রেসিডেন্ট তায়িফ এরদোয়ানের কাজ হতে পারে। পেনিসিলভানিয়ার নিজ বাড়িতে দীর্ঘ নিরবতা ভেঙ্গে নিজ দেশে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পরদিন শনিবার (১৬ জুলাই) কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের ব্রিফ করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সাবেক রাজনৈতিক এ সহকর্মী। ব্রিটেনের প্রভাবশালি দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এ খবর দিয়েছে।
শুক্রবারের (১৫ জুলাই) তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে ফেতুল্লা গুলেনের বিরুদ্ধে কলকাঠির নাড়ার অভিযোগ আনেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ফেতুল্লা গুলেন বলেন, ‘বিশ্ববাসী এ কথা বিশ্বাস করবে বলে আমার মনে হয় না। আমার ধারণা, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এ নাটক নিজে সাজিয়ে অন্যদের অভিযুক্ত করছেন।’
হিযমেত আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ফেতুল্লা গুলেন একসময় তুরস্কের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। একসময় বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের রাজনৈতিক সহকর্মীও ছিলেন তিনি। এরদোয়ানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পর ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করেন গুলেন। পেনিসিলাভানিয়ার ওই বাড়িতে উঠেন ১৯৯৯ সালে। বাড়ির যে কামরায় বসে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন গুলেন, সেটি ছিল চামড়ায় মোড়ানো ধর্মীয় বইয়ে ঠাসা। তুর্কি চা ও হালকা মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করেন সংবাদকর্মীদের।
সরকার পরিচালনায় তিনি যে কোনো ধরনের সামরিক হস্তক্ষেপের বিরোধী জানিয়ে ফেতুল্লা গুলেন বলেন, ‘১৯৯০ সালে তুরস্কে সামরিক অভ্যুত্থানে ব্যক্তিগতভাবে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ওইসময় আমাকে জেলে পুরা হয়েছিল এবং নানাবিধ হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল।’
‘তুরস্ক এখন গণতন্ত্রের পথে রয়েছে, এখান থেকে পেছনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই’-যোগ করেন তিনি।
সামরিক অভ্যুত্থান সফল হলে তুরস্কে ফিরতেন কি না জানতে চাইলে ফেতুল্লা গুলেন বলেন, ‘মাতৃভুমিকে বেশ মনে পড়ে। সেখানে যেতে উন্মুখ। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, স্বাধীনতা। তুরস্কের রাজনৈতিক পরিবেশ বেশ গোলমেলে, সেখান থেকে বহুদুরে আমেরিকায় আমি স্বাধীনতা নিয়ে বসবাস করছি।’
অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার পরদিন শনিবার (১৬ জুলাই) স্বতঃস্ফূর্ত এক সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান, পেনসিলভানিয়ায় স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা ফেতুল্লা গুলেনকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘তুরস্ক কখনও বন্ধু কোনা দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের ফেরত পাঠানোর অনুরোধ ফিরিয়ে দেয়নি। আমরাও চাইবো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদদাতা ফেতুল্লা গুলেনকে তুরস্কের হাতে তুলে দেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।’
মন্তব্য চালু নেই