অভ্যুত্থানের পর চাকরিচ্যুত ৪৫ হাজার

তুরস্কে গত সপ্তাহে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর বিচারক, শিক্ষক, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কর্মচারী ও পুলিশসহ বিভিন্ন বিভাগের ৪৫ হাজারের বেশি লোকজনকেকে চাকরিচ্যুত করেছে সরকার।

দেশটির বিভিন্ন খাতে কর্মরতদের মধ্য থেকে প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ানের প্রতি অপেক্ষাকৃত কম অনুগতদের বেছে বেছে বরখাস্ত করা হচ্ছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবারও বরখাস্ত করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৫ হাজারের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারীকে। তুরস্কের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ছাঁটাইকৃত শিক্ষাকর্মীরা তুরস্কের নির্বাসিত ধর্মীয় ফেতুল্লা গুলেনের অনুসারী। ফেতুল্লা গুলেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসন নিয়েছেন। এরদোয়ান সরকার তাকেই এই অভ্যুত্থানের জন্য দায়ী করেছে। গুলেন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

তুরস্কে অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর দেশ জুড়ে চলা শুদ্ধি অভিযানে গত ৪ দিনে চাকরিচ্যূত হয়েছেন বিভিন্ন খাতের ৪৫ হাজারের বেশি বিচারক, শিক্ষকসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারী। মঙ্গলবারও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৫২০০ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন বিশ্বদ্যালয়ের ১৫৭৭ জন ডিনকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। আরো বরখাস্ত করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৮৭৭৭, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১৫শ এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ২৫৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে। অভ্যুত্থান চেষ্টার পরদিনেই চাকরিচ্যুত হয়েছেন ৩ হাজার বিচারক ও ৯ হাজার পুলিশ কর্মকর্তা। এছাড়া অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে ৬ হাজারের বেশি সামরিক সদস্যকে। শুধু তাই নয়, এসব বিদ্রোহী সেনা সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের চরম শাস্তি নিশ্চিত করতে মৃত্যুদণ্ড পুনর্বহালের উদ্যোগ নিয়েছে তুর্কি সরকার।

কেবল গণগ্রেপ্তার করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না এরদোয়ান সরকার। তাদের রোষানলে পড়েছে দেশটির সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমগুলোও। নির্বাসিত নেতা গুলানের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার ২৪টি রেডিও ও টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স বাতিল করেছে তুরস্কের মিডিয়া রেগুলেশন বডি।

এ অবস্থায় তুর্কি সরকারের প্রতি আইনের শাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন না করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাতে (১৫ জুলাই) একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যরা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা চালায়। এসময় দু পক্ষের সংঘর্ষে ২৩২ জন নিহত এবং আরো ১৫৪১ জন আহত হয়। পরে এরদোয়ানের সমর্থক ও সাধারণ জনতা রাস্তায় বেরিয়ে আসলে ওই অভ্যুত্থানটি ব্যর্থ হয়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই