অভিনব প্রতারণা: তাঁরা কখনো সচিব, কখনো এডিসি বা মন্ত্রীর পিএস

তাঁদের কাজই প্রতারণা করা। কখনো এডিসি জেনারেল, কখনো মন্ত্রীর পিএস আবার কখনো সরকারি সচিব পরিচয় দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করাই তাঁদের কাজ।

আবার কখনো কখনো হাসপাতালে স্বজন ভর্তি, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কিংবা মৃত্যুর সংবাদ দিয়েও স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেন এই প্রতারকচক্রের সদস্যরা।

অভিযোগের ভিত্তিতে গাজীপুরের জয়দেবপুর চৌরাস্তাসংলগ্ন তেলিপাড়া ও দিঘিরচালায় অভিযান চালিয়ে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এই প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র‌্যাব ১-এর গাজীপুরের পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউল ইসলাম। আজ শুক্রবার সকালে র‍্যাবের এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আটকরা হলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানার মহিষামুড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. রাশেদ (৩০) এবং লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানার রঘুনাথপুর গ্রামের পারভীন আক্তার সুমি (২৫)।

র‍্যাবের অভিযোগ, তাঁরা গাজীপুরের জয়দেবপুরে ভাড়া বাসায় থেকে প্রতারণা করে আসছিলেন। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল সেট, ৪৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় চক্রের আরেক সদস্য টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর থানার চরপাতলাকান্দি গ্রামের মো. রাজু আহমেদ (৩৫) পালিয়ে যান।

আটকদের বিরুদ্ধে মো. লাভলু মিয়া ওরফে লাবু মিয়া বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা একটি করেছেন। তাঁদের টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‌্যাব আটকদের প্রতারণার কৌশলের কথা উল্লেখ করে জানায়, চক্রের সদস্যরা আগেভাগে এলাকার বিভিন্ন পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। যেসব পরিবারের সদস্যরা বাইরে থাকে, তাঁদের মুঠোফোন নম্বর জোগাড় করেন তাঁরা। পরে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রথমে পরিবারের বাইরে থাকা ব্যক্তিকে কিছুক্ষণের জন্য তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ রাখতে বলেন। এই ফাঁকে ওই ব্যক্তির বাড়ির লোকজনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেন প্রতারকরা।

তাঁরা তখন জানান, পরিবারের সদস্য সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অমুক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসার জন্য বিকাশে দ্রুত টাকা পাঠাতে হবে। না হলে রোগী মারা যেতে পারে। এ সময় তারা ঘটনাটি প্রমাণের জন্য একজন ভুয়া পুলিশ সদস্যের নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। এই নম্বরটিতে তারা নিজেরাই কথা বলে।

উদ্বেগে পরিবারের সদস্যরা আহত ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য বিকাশে টাকা পাঠায়। টাকা পাওয়ার পরই সব নম্বর বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই