অপুষ্টির লক্ষণ বাড়ছে মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে
অপুষ্টি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা। ক্ষুধা ও স্থূলতা, দু’টিই অপুষ্টির লক্ষণ এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অপুষ্টির দু’টি ধরনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইতালির রাজধানী রোমে অনুষ্ঠিত পুষ্টি বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। এফএও’র তথ্যানুযায়ী, প্রতিরাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায় বিশ্বের প্রায় ৮০ কোটি লোক এবং স্থূলতার সমস্যায় ভুগছে ১৯০ কোটি লোক।
বিশ্বের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ অপুষ্টির সমস্যায় ভুগছে। এতে উৎপাদনশীলতা হ্রাস ও চিকিৎসা বাবদ বিশ্ব অর্থনীতির সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে। অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়া রোধে রাষ্ট্রগুলো জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ অপুষ্টির শিকার হতে পারে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা।
এসব সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধিরাও ওই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সম্মেলনে এফএও’র মহাপরিচালক হোসে গ্রাজিয়ানো দ্য সিলভা বলেছেন, ‘পুষ্টিকে অবশ্যই একটি সর্বজনীন ইস্যু হিসেবে গণ্য করতে হবে, এটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব।’ অপুষ্টিকর খাবার এবং ব্যায়ামের অভাব স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
মেক্সিকো, ব্রাজিল, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ব্রিটেনে লন্ডন-ভিত্তিক ওভারসিস ডেভলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, আইসক্রিম, হ্যামবার্গার, চিপস, চকোলেটের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দাম ১৯৯০ সালের পর থেকে ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে, অপরদিকে ফল ও শাক-সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্মেলনে টফ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রিডম্যান স্কুল অব নিউট্রিশন সায়েন্স এন্ড পলিসির অধ্যাপক প্যাট্রিক ওয়েব বলেন, ‘শুধু খাওয়ালেই চলবে না, নয়শো’ কোটি লোকের পুষ্টি নিশ্চিত করতে আমাদের খাদ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করতে হবে।’ খাবার ব্যবসা যথারীতি এক সর্বনাশা স্বাস্থ্য সঙ্কট তৈরি করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
কৃষি গবেষণা বিস্তৃত করতে ও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ভর্তুকি বৃদ্ধি, খাদ্য শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের স্বাস্থ্যকর খাবার উৎপাদনে অনুপ্রাণিত করতে এবং ক্রেতাদের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরির শিক্ষা দিতে বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোর প্রতি আহবানও জানিয়েছেন এ অধ্যাপক।
মন্তব্য চালু নেই