সেতু পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশ না পেয়ে ওবায়দুল কাদেরের তীব্র ক্ষোভ

আগে থেকে খবর দিয়ে সেতু পরিদর্শনে গেলেও ‘প্রটোকল’ না পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের ফোন দিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার রাজধানীর বাবুবাজার সেতু পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে পুলিশ না দেখে ডজনখানেক টেলিভিশন ক্যামেরার সামনেই পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার এবং ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন কাদের।

সেতু, কালভার্ট, বাস-রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে প্রায়ই দেখা যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে, মাঝে মাঝে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও নেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।

মন্ত্রীর এসব বিষয় কারো কারো প্রশংসা কুড়ালেও নিজ দলের শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ এর সমালাচনা করে ‘এসব লোক দেখানো’ কাজ বলে মন্তব্য করেছেন।

সম্প্রতি কারো নাম না ধরেই আশরাফ বলেছিলেন, “লাফালাফি করা, সাংবাদিকদের হাতে নেওয়ার, হাতে তালি দেওয়া, মিডিয়াকে উপস্থিত করাই যদি মূল উদ্দেশ্য হয়; তাহলে কিন্তু প্রতিদিনই আমরা ব্রিজ-কালভার্ট দেখতে যাইতে পারি।”

শুক্রবার বাবুবাজার সেতুর উপর গাড়ির বহর থামিয়ে পুলিশ সদস্যদের খোঁজ করেন কাদের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে না পেয়ে পুলিশ কর্তাদের ফোন করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

মন্ত্রীর ব্যক্তিগত মোবাইল থেকেই কর্মকর্তারা পুলিশ কর্তাদের ফোন দেন। ফোন ধরার সঙ্গে সঙ্গে রাগের সুরেই মন্ত্রীকে কথা বলতে শোনা যায়।

ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে মোবাইলে মন্ত্রী বলেন, “আমি আজ সকাল ১১টায় আসব সেটাতো আপনাদেরকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলাম। তাহলে কেন আমি আসার পরও একজন পুলিশ অফিসারকে পাচ্ছি না?”

বাবুবাজার সেতুর অর্ধেক ঢাকা মহানগর পুলিশের অধীনে থাকলেও বাকি অর্ধেকের দায়িত্ব ঢাকা জেলা পুলিশের।

ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা শেষে ঢাকা পুলিশ সুপারকে ফোন করেন মন্ত্রী। তাকে ফোনে না পেয়ে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী মোবাইল করেন পুলিশের প্রধান কর্তা এ কে এম শহীদুল হককে।

আইজিপিকে মন্ত্রী বলেন, “কাউকে না পেলে (মোবাইলে) আপনাকে পাব সেটা আমি জানি। বাবুবাজার ব্রিজের উপর বাস দাঁড়িয়ে স্ট্যান্ড করা হয়েছে- সাংবাদিকদের নিয়ে আমি সেগুলো সরাচ্ছি। কিন্তু কোনো পুলিশ পাচ্ছি না, আপনি ব্যাপারটা একটু দ্যাখেন।”

আইজিপির সঙ্গে মন্ত্রীর কথা শেষের পরপরই ঢাকা পুলিশ সুপারের (এসপি) ফোন আসে মন্ত্রীর মোবাইলে।

এসপিকে কাদের বলেন, “আপনি আসতে পারেননি ঠিক আছে, আপনার একজন অফিসার, কনস্টেবলও নাই কেন? আমি তো আগেই জানিয়ে রেখেছিলাম আসব।”

পরে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সেতুর উপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে স্ট্যান্ড বানানো যাবে না। ব্রিজগুলো সবসময় পরিষ্কার থাকবে যাতে ব্রিজে কোন ধরনের যানজট সৃষ্টি না হয়।

নির্দেশনা সত্বেও সেতুর উপর থেকে ‘স্টেশন’ না সরানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী।

সড়ক-মহাসড়ক মেরামত নিয়ে ঠিকাদারদের উদ্দেশে কাদের বলেন, “বৃষ্টির অজুহাত দাঁড় করিয়ে কেউ দায় এড়াতে পরবেন না। বৃষ্টির আগে আপনারা কোথায় ছিলেন?”

ঠিকাদারদের বৃষ্টির মধ্যেই কাজ করে রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।



মন্তব্য চালু নেই