সাবধান, ফার্মগেটে বোরকা পরা নারীর ফাঁদ !

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটে বোরকা পরা নারীদের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছ অসংখ্য মানুষ। প্রতিদিন এমন ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দেখেও না দেখার ভান করছে। ফর্মগেট প্রধান সড়কের পাশে ফাঁকা জায়গায় সন্ধ্যার পর র‌্যাব-পুলিশের গাড়ি মধ্যরাত পর্যন্তই থাকলেও তাদের সামনেই একেকজন নিরীহ মানুষকে ইশারার ফাঁদে ফেলে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে টাকা-পয়সা মুল্যবান সামগ্রী। পরে দায়িত্বরত পুলিশকে এ বিষয়ে জানানো হলেও উল্টো ভুক্তভোগীকেই হেনস্থা হতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টা। ইশারার ভাষা বুঝতে দেরি হয় না এক যুবকের। সঙ্গে সঙ্গে রাজিও হয়ে যান তিন। একসঙ্গে রিকশায় ওঠেন। উদ্দেশ্য নিরাপদ গন্তব্যস্থল। মাঝের ২০ মিনিট পর ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের সামনে এসে ওই যুবক হাউমাউ করে কান্নাকাটি জুড়ে দেন। মুহুর্তেই লোকজনের জটলা। কৌতুহল বশত কান্নার কারণ জানতে চাইলে ওই যুবক প্রথমে বলতে না চাইলেও পরে বলেন প্রতারণার কাহিনী। পুরুষ শিকারী বোরকা পরা নারীর খপ্পরে পড়ে তিনি নগদ টাকাসহ খুইয়েছেন দামি মোবাইল ফোনসেটও। পরে ওই নারীকে অনেক খুঁজেও পাওয়া যায়নি। পরে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে ওই যুবককে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, কেন ওই নারীর সঙ্গে কথা বললো সে। পরে উপায়ন্তর না পেয়ে অনেকটা লুকিয়ে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান ওই যুবক।

জানা যায়, পুরো ফার্মগেট এলাকায় সকাল ১০টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক বোরকা পরা নারী ঘোরাঘুরি করে থাকে। তাদের কাজ হলো পুরুষ শিকার করা। ফার্মগেটের এই নারীরা কাউকে পরোয়া করে না। পুলিশকে টাকা দিয়ে তারা এসব কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিনি ওই যুবকের মত অসংখ্য যুবক ও তরুণের কাছ থেকে এমন অভিযোগ শোনা যায়। অনেকেই সন্মানহানির ভয়ে কাউকে কিছু বলেনা। আবার অনেকে সর্বশান্ত হয়ে পরে খুঁজতে আসে সংশ্লিষ্ট নারীকে। গত বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এক নারীকে বেধড়ক মারপিট করতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই নারী তেজগাঁও কলেজের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফাঁদে ফেলে মানিব্যাগে থাকা মাত্র ২ শ’ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। পরে সহপাঠীদের নিয়ে ওই নারীকে খুঁজতে এসে তারা পেয়ে যায় ওই নারীকে। প্রথমে টাকা চাইলে না চেনার ভান করায় বেধড়ক মারপিট করে চলে যায় যুবকেরা। এছাড়া মাঝেমধ্যে স্থানীয় ক্ষুদে ব্যবসায়ীরাও এসব চিহ্নিত বোরকা পরা নারীদের মারপিটের ভয় দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করলেও আবারও জড়ো হয় দলে দলে।

ব্যবসায়ীরা জানান, পুলিশের সামনেই এসব কর্মকা- চলছে। শেরে বাংলা নগর ও তেজগাঁও থানার কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চলে এই ব্যবসা। তারা আরও বলেন, ফার্মগেট এলাকায় বাস স্টপেজ হওয়ায় অনেকেই এখানে বাসের জন্য অপেক্ষা করেন। আর এ ফাঁকে ওই নারীরা তৎপরতা চালায়। এখানে অনেক অফিস-আদালতের বোরকা পরা নারীরাও তাদের দেখে বিব্রত হন। প্রশাসনের লোকজন ইচ্ছা করলেই একদিনের মধ্যে তাদের উৎখাত করতে পারে। কিন্তু তাদের সঙ্গে সখ্যের কারণে কিছু বলেন না। আর প্রশাসনের উচিত এদের ব্যাপারে কঠোর হওয়া।

এ ব্যাপারে তেজগাঁও থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, এর আগেও এমন অভিযোগ জানা গেছে। তবে কেই থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে মাঝেমধ্যেই এসব নারীদের ধরতে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু অভিযান শেষে আবারও চলে আসে তারা। কোন পুলিশ তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নেয় কি না সে ব্যাপারে খোঁজ নেবেন বলে জানান তিনি।-আমাদেরসময়



মন্তব্য চালু নেই