ফাঁকা ঢাকায় চলছে সিটিংয়ের নামে চিটিং!

টানা নয়দিনের ঈদের ছুটিতে রাজধানী এখন অনেকটাই ফাঁকা। সড়কগুলোতে নেই চিরচেনা সেই যানজট। থেমে থেমে দেখা মিলছে গণপরিবহনের। মূল সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা ও লেগুনা। তবে সারা বছর যেসব পরিবহন লোকাল হিসেবে রাজধানীতে চলাচল করেছে ঈদ এলেই সেগুলো ‘সিটিং সার্ভিসসে’ রূপ ধারণ করছে। পরিবহন কম থাকায় যাত্রীদের অনেকটা ‘জিম্মি’ করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ কারণে উভয় সংকটে পড়েছেন ঢাকায় থাকা সাধারণ মানুষ। একদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে বাইরে বের হয়ে পরিবহন সংকটের কারণে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবহন পেলেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। আবার কোথাও কোথাও ঈদের বকশিসও মেটাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার থেকে চিরচেনা লোকাল বাস সিটিং সার্ভিস হয়ে গেছে। আর অন্যদিকে রাজধানীর বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়েছে যাত্রীরা। সকাল থেকে থেমে থেমে চলা বৃষ্টি মানুষকে আরো দুর্ভোগে ফেলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর টু সায়েদাবাদ, সদরঘাট রুটে চলা তুরাগ, বলাকা, সুপ্রভাতসহ বেশকিছু লোকাল পরিবহন ঈদকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করেই সিটিং করে ফেলেছে। ফলে এই রুটের বাসে নিরুপায় হয়ে যাত্রীদের উঠতে হচ্ছে।

শুধু এই রুটেই নয়, গুলিস্তান টু মিরপুর, মতিঝিল টু মিরপুর, যাত্রাবাড়ী টু গাবতলী, সদরঘাট টু গাবতলী রুটে যেসব পরিবহন লোকাল হিসেবে চলাচল করতো ঈদকে কেন্দ্র করে এসব বাস ‘সিটিং’ করে ফেলা হয়েছে।

সায়েদাবাদ থেকে মগবাজারে নিয়মিত যাতায়াতকারী শহিদুল ইসলাম শ্যামল নামে বলেন, সায়েদাবাদ থেকে গাজীপুরগামী বলাকা সার্ভিস কমলাপুর থেকে মগবাজার পাঁচ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ১০ টাকা, মহাখালীর ভাড়া ১০ টাকা হলেও নেয়া হচ্ছে ২০ টাকা এবং আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা।

লোকাল সার্ভিস সিটিং করে বাড়তি টাকা কেন আদায় করা হচ্ছে? জিজ্ঞেস করতেই তুরাগ গাড়ির এক কন্ড‍াক্টর বলেন, মালিক আমাদের থেকে গাড়ি ভাড়া কম নেবে না। ঈদে মানুষ বাড়ি চলে গেছে। আর যারা ঢাকায় রয়েছেন তারা রাস্তায় কম বের হয়। আমরা যাত্রী পাই না। তাই সিটিং সার্ভিস করতে বাধ্য হয়েছি।

কোথাও কোথাও বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রী-বাস শ্রমিকদের মধ্যে বাদানুবাদের ঘটনাও ঘটছে।

শ্যামলী মোড়ে শাহবাগে আসার জন্য বাসের অপেক্ষায় থাকা মনির হোসেন নামের একজন বলেন, রাস্তা ফাঁকা, মাঝে মাঝে বাস আসলেও সিটিং বলে ওঠার আগেই ভাড়া বেশি আবদার করছে। তাই দাঁড়িয়ে আছি।

মনিরের পাশ দাঁড়িয়ে থাকা অন্য একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঈদে সবাই বাড়তি আয়ের চেষ্টা করে। কিন্তু বাস শ্রমিকরা যা করছে এটা কোনো নিয়মের মধ্যেই পড়ে না। এটা হলো সিটিংয়ের নামে টিচিং।

এদিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর থেকে অনেকগুলো পরিবহনে গুলিস্তান পর্যন্ত ১০০ টাকা করে ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রুটে চলা লেগুনাতেও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিয়োগ পাওয়া গেছে।

শ্যামলী থেকে ঢাকা উদ্যান পর্যন্ত নির্ধারিত ভাড়া ১২টাকা হলেও গত দুই তিনদিন ধরে ঈদের বকশিসের কথা বলে ১৫টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই