তরুণীকে ১০ বছর ধর্ষণ করেছে আ’লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান !

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলা পরিষদের আলোচিত চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এসএম মাহফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলায় ওই তরুণী অভিযোগ করেছেন- উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে প্রায় দশ বছর আটকে রেখে ধর্ষণ করেছেন।

কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মাহফিজুর রহমান কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

ওই তরুণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার রাতে তাকে নিরাপদ হেফাজতে নিতে পুলিশ আদালতে আবেদন করেছে। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আদালতের বিচারক তানিয়া বিনতে জাহিদ কোনো আদেশ দেননি।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শমসের আলী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোমবার ৭ মার্চ রাতে কচুয়া উপজেলার চরসোনাকুড় গ্রামের এক নারী (২৩) বাদী হয়ে কচুয়া থানায় মামলাটি করেন।

বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলা নিয়েছে। বুধবার ৯ মার্চ বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে।

মামলার বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ‘২০০৫ সালের ২১ জুন কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের চর সোনাকুড় গ্রামের ওই তরুণীকে কাজ দেয়ার কথা বলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এসএম মাহফিজুর রহমান তার মালিকানাধীন সাইনবোর্ড এলাকার বিসমিল্লাহ ভবনে নিয়ে আসেন। এখানে এনে ওই দিনই তাকে জোর করে ধর্ষণ করেন।’

ওই তরুণী এখান থেকে পালিয়ে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ফাঁস করে দিতে পারে এ ভয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম মাহফিজুর রহমান তাকে ওই বাড়িতে আটকে রেখে পাহারা বসিয়ে দিনের দিনের পর দিন তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে এসেছে।

এর মধ্যে সে অন্তত তিনবার তার বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। কিন্তু চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনী তাকে ধরে এনে আবারও বন্দি করে। ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর ওই তরুণী কৌশলে পালিয়ে ঢাকায় তার ছোট ভাইয়ের বাসায় চলে যায়। সেখানে গিয়ে তার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে ঘটনাটি জানালে পুলিশ তাকে খুলনার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠায়।

ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেছি।

মঙ্গলবার ওই তরুণীর নিরাপত্তা চেয়ে নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে রাখতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এসএম মাহফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক আছেন। তাকে ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।’

ধর্ষিতার ভাই (রুদান শেখ) বলেন, ‘প্রায় এক যুগ আগে আমার বোনকে কাজ দেয়ার কথা বলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এসএম মাহফিজুর রহমান বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে বোনের সঙ্গে আমাদের কোন যোগাযোগ ছিল না। বিভিন্ন সময়ে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা করতে পারেনি।’

সম্প্রতি বোন কৌশলে পালিয়ে এসে আমাকে ঘটনা জানলে আমি তাকে নিয়ে পুলিশের কাছে যাই। তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা এতোদিন ভয়ে মামলা করতে পারিনি। আমি এখন তার বিচার দাবি করছি।

অবশ্য এ বিষয়ে জানতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা এসএম মাহফিজুর রহমানের সঙ্গে ফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পওয়া সম্ভব হয়নি।



মন্তব্য চালু নেই