সালিশে যুবকের পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে নির্যাতন করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় আলাউদ্দিন (৩৫) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে মধ্যযুগীয় সালিশি ব্যবস্থার মুখোমুখি করা হয়েছে।

একই সঙ্গে ওই যুবকের পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে নির্যাতন করেছেন স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান। শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের ওই চেয়ারম্যানের নাম মহিউদ্দিন খান। মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।

গত ৯ এপ্রিলের এ ঘটনায় সোমবার (১৭ এপ্রিল) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খানসহ নয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০ -২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শরণখোলা থানা পুলিশের এসআই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে বিকেলে এ মামলাটি করেন।

মামলার পরপরই শরণখোলার মধ্য বানিয়াখালী গ্রামের আ. রব হাওলাদের ছেলে রেজাউল করিম (২৫) ও পশ্চিম বানিয়াখালী গ্রামের আবু হানিফ মুন্সীর ছেলে নূর হাসান মুন্সী (২২) নামের দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ফুলহাতা গ্রামের আলাউদ্দিন (৩৫) নামের ওই যুবকের সঙ্গে শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের মধ্য বানিয়াখালী গ্রামের এক মেয়ের মুঠো ফোনে পরিচয় হয়।

এর সূত্র ধরে গত ৯ এপ্রিল আলাউদ্দিন ওই মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু এলাকায় অপরিচিত হিসেবে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় কয়েক যুবক তাকে ধরে ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খানকে খবর দেন।

তাৎক্ষণিকভাবে ইউপি চেয়ারম্যান ওই এলাকায় গেলে তার কাছে স্থানীয়রা ওই যুবকের বিরুদ্ধে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে করে বিচার দাবি করেন।

এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খান ওই এলাকার শহিদের চায়ের দোকানের সামনে প্রকাশ্যে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) ইসমাইল হোসেনকে দিয়ে আলাউদ্দিনের পুরুষাঙ্গে ইট বেঁধে দাঁড় করিয়ে রেখে বর্বর নির্যাতন চালান।

প্রায় আধাঘণ্টা পরে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে মুক্তি মেলে আলাউদ্দিনের। পরে তাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করে চেয়ারম্যানের সহযোগীরা।

ইউপি চেয়ারম্যানের এমন ন্যক্কারজনক বিচারের দৃশ্য মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় ওঠে। ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। পরে এ ঘটনায় মামলায় হয়।

শরণখোলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল জলিল বলেন, বিচারের নামে এমন বর্বরতায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানসহ আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনের নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।



মন্তব্য চালু নেই