‘গুড্ডি’র দখলে পুরান ঢাকার আকাশ

১৪ জানুয়ারি বিকেল থেকেই পুরান ঢাকার আকাশ চলে যায় ঘুড়ির দখলে। আকাশ জুড়ে নানান রঙ আর বাহারের ঘুড়ি। তবে এর আয়োজন চলে গত এক সপ্তাহ ধরে। খোলা ছাদে চলে সুতায় মাঞ্জা দেয়ার ধুম।

বুধবার আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই পুরান ঢাকার বাহান্ন রাস্তা তেপান্ন গলির অধিকাংশ বাসার ছাদে ছাদে শুরু হয় ঘুড়ি ওড়ানোর উন্মাদনা। শীতের উদাস দুপুর আর নরম বিকেলে আকাশে গোত্তা খায় নানান রঙের ঘুড়ি। ঘুড়িতে ঘুড়িতে শুরু হয় হৃদ্যতা, আবার কাটা-কাটির খেলা। অবশেষে সেই খেলায় হেরে যাওয়া অভিমানী ঘুড়ি সুতার বাঁধন ছিড়ে উড়ে যায় দূরে।

পৌষ সংক্রান্তির দিনই পালিত হয় পুরান ঢাকার এবং আদি ঢাকাইয়াদের ঐতিহ্যের এ সাকরাইন উৎসব। পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া, তাঁতীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, চকবাজার, লালবাগ, সূত্রাপুর, লালকুঠি মেতে উঠে ঐতিহ্যের এই উৎসবে। আকাশে ঘুড়ির তালে তালে নাছে দেহ, আর বাতাসে ভেসে যাওয়া গানে মেতে উঠে শিশু থেকে বৃদ্ধ।

অতীতে সাকরাইনে পুরান ঢাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে জামাইদের নাটাই, বাহারি ঘুড়ি উপহার দেয়া এবং পিঠার ডালা পাঠানো ছিলো অবশ্য পালনীয় অংশ। ডালা হিসেবে আসা ঘুড়ি, পিঠা আর অন্যান্য খাবার বিলি করা হতো আত্মীয়স্বজন এবং পাড়ার লোকদের মধ্যে। নীরব প্রতিযোগিতা চলতো কার শ্বশুরবাড়ি থেকে কত বড় ডালা এসেছে।

সাকরাইন শুধু ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব নয়। পুরান ঢাকার ঘরে ঘরে চলবে মুড়ির মোয়া, ভেজা বাখরখানি আর পিঠা বানানোর ধুম।



মন্তব্য চালু নেই