ডিমও খাবেন, খোসাও খাবেন!

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ‘দুধ-ডিম’ মানিক জোড় শব্দ। ডিম খাই মানে হল, এর ভেতরের সাদা অংশ আর কুসুম খাই, খোসা নয়! আচ্ছা এখানে খোসার কথা আসল কেন? ডিমের খোসা আবার খায় নাকি!
জ্বি, অবশ্যই খাবেন এবং জমিয়ে রাখবেন খাওয়ার জন্য। তবে আমাদের দেশের ফার্মের মুরগির খোসা না খাওয়ায় উত্তম। কারণ এর খাদ্য প্রক্রিয়ার ভেজাল-বিষাক্ততা নিয়ে প্রচুর কথা আমাদের কম-বেশি জানা আছে। দেশী মুরগী বা হাঁসের ডিমের খোসা কাজে লাগান।
ডিমের খোসাতে রয়েছে ৯০ ভাগের বেশি ক্যালসিয়াম। এ কথাই যেন ছোটবেলায় শোনা গল্প বলে দিয়েছে। বলা হয়ে থাকে, ডিম সোজা করে হাতির পায়ের নিচে দিলেও ভাঙ্গে না। এটা সত্য কিনা জানি না, তবে হাত দিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন। যতউ চাপ দিন তালু দিয়ে ভাঙ্গতে পারবেন না। ডিমের খোসার গঠনতন্ত্র ও এর প্রধান উপাদান ‘ক্যালসিয়াম’ এমন অভঙ্গুর অবস্থার মূল কারণ।
খোসাডিমের খোসায় ২৭ ধরনের বিভিন্ন প্রকার মিনারেল বা খনিজ উপাদান রয়েছে। যা মানব দেহের হাড় ও দাঁতের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এর গঠনতন্ত্র মানব হাড় ও দাঁতের মতোই প্রায়। ডিমের খোসার প্রোটিনে এমিনো এসিডসহ প্রয়োজনীয় এসিড যৌগ আছে যা ক্যালসিয়ামকে ধারণ করে। আরও আছে আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ক্লোরিন, ফসফরাস ইত্যাদি। সব মিলিয়ে প্রতিদিন দেড় থেকে তিন গ্রাম ডিমের খোসা হতে পারে অসাধারণ প্রাকৃতিক খাদ্য।
অতিরিক্ত কফি পান, মদ্য পান, মাহিলাদের ঋতুস্রাব-গর্ভধারণ ও বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব হলে শরীরে ক্যালসিয়াম কমতে থাকে। দ্রুত বাড়তি যোগানের জন্য ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট না খেয়ে ডিমের খোসা খান, এটি যেমন প্রাকৃতিক, তেমনি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের আধার আর সাশ্রয়ী।
ভাবছেন কিভাবে খাবেন? জটিল কোনো প্রক্রিয়া নেই। বিয়ার গিলসের মতো সরাসরি চিবিয়ে খেতে পারেন। সমস্যা নেই। তবে মনস্তাত্ত্বিক সামর্থ ও পাকস্থলির শক্তিমত্তা নিয়ে সন্দেহ থাকা চলবে না।
অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রথমে ৫ মিনিট পর্যন্ত ডিমের খোসা সেদ্ধ করে ফেলুন। স্বাভাবিক বাতাসে শুকানোর পর ব্লেন্ডার বা হামান দিস্তায় গুড়া করুন— যতটা করা সম্ভব। কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে দাঁত মাজতে পারেন। যা দাঁতের ক্ষয় রোধে অত্যন্ত ফলদায়ক।
গুড় ও পানির সঙ্গে মিশিয়ে শরবত বানিয়ে পান করতে পারেন। দ্রুত গ্যাস্টিক বা আলসারের আগ্রাসন থেকে রেহাই পেতে ২টি ডিমের খোসার গুড়ো, ৩ টেবিল চা চামচ লেবুর রস ও আধা কাপ গরম দুধ মিশিয়ে সকালে ও রাতে পান করুন। সকালে খালি পেটে খেলে আরও দ্রুত ফলদায়ক।
পাঁচটি ডিমের খোসা গুড়ো দশ কাপ পরিমাণ পানিতে ভাল করে মিশিয়ে ফ্রিজে এক সপ্তাহ রেখে দিন। তারপর প্রতিদিন ২ গ্লাস করে পান করুন। এতে রক্ত পরিষ্কার হবে। তবে যাদের কিডনিতে সমস্যা আছে, তাদের জন্য নয় ডিমের খোসা। এটি কিডনিতে পাথর তৈরিতে সাহায্য করে। যাদের কিডনিতে সমস্যা নেই- তাদের জন্য বলা যায়, কৃত্রিম বা রাসায়নিক ঔষধ ত্যাগ করে প্রাকৃতিক উপায়-উপকরণ ব্যবহার করুন, সুস্থ থাকুন।
জাস্ট ন্যাচারালি হেলথি অনলাইন অবলম্বনে।



মন্তব্য চালু নেই