কিডনি রোগ নিরাময় করা কী সম্ভব?

কিডনি রোগ খুবই জটিল একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। অন্তর্নিহিত কারণের উপর ভিত্তি করে কয়েক ধরনের কিডনি রোগের নিরাময় করা সম্ভব, যদিও এটা কঠিন। তবে দীর্ঘমেয়াদী বা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ নিরাময় হয় না। চিকিৎসা সাধারণত উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ, জটিলতা কমানো এবং রোগের বৃদ্ধিকে ধীর করার মাধ্যমে চিকিৎসা করেন। কিডনি রোগের জটিলতা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বস্তিদায়ক চিকিৎসার অন্তর্গত বিষয়গুলো হচ্ছে :

১। উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ

কিডনি রোগীদের সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে তোলে উচ্চ রক্তচাপ। আপনার চিকিৎসক হয়তো রক্তচাপ কমানোর ঔষধ দেবেন যা অ্যাঞ্জিওটেন্সিন কনভারটিং এনজাইম (ACE) ইনহিবিটরস বা এঞ্জিওটেন্সিন ২ রিসেপ্টর ব্লকার হিসেবে কাজ করবে এবং কিডনির কাজকে অক্ষুন্ন রাখতে সাহায্য করবে। উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ প্রাথমিকভাবে কিডনির কাজ কমিয়ে দেয় এবং ইলেক্ট্রোলাইটের মাত্রাকে কমিয়ে দেয়। তাই আপনার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য ঘন ঘন রক্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন। আপনার চিকিৎসক হয়তো মূত্রবর্ধক ঔষধ ও কম লবণ গ্রহণের পরামর্শ দেবেন।

২। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর ঔষধ

আপনার চিকিৎসক হয়তো স্টেটিন নামক ঔষধ গ্রহণের পরামর্শ দেবেন কোলেস্টেরল কমানোর জন্য। ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগীদের উচ্চমাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল থাকতে পারে যা হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

৩। রক্তস্বল্পতা নিরাময়ের ঔষধ

নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে আপনার চিকিৎসক হয়তো হরমোন ইরাইথ্রোপোয়েটিন (uh-rith-roe-POI-uh-tin) নামক সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে বলবেন, কখনো কখনো আয়রন ও দিতে পারেন। ইরাইথ্রোপোয়েটিন সাপ্লিমেন্ট অনেকবেশি রক্তকোষ উৎপাদনে সাহায্য করে। যা অ্যানেমিয়ার সাথে সম্পর্কিত দুর্বলতা ও ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

৪। ফোলা কমানোর ঔষধ

দীর্ঘমেয়াদী কিডনি রোগের ফলে শরীরে তরল জমতে পারে। এর ফলে পা ফুলে যায় ও হাই ব্লাড প্রেশার হতে পারে। শরীরের তরলের ভারসাম্য রক্ষার জন্য ডাইউরেটিক ঔষধ সাহায্য করতে পারে।

৫। হাড়ের সুরক্ষার জন্য ঔষধ

আপনার চিকিৎসক ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পরামর্শ দেবেন হাড়ের দুর্বলতা প্রতিরোধের জন্য। ফসফেট বাইন্ডার নামক ঔষধ গ্রহণ করতে পারেন যা আপনার রক্তের ফসফেটের মাত্রা কমাবে এবং রক্ত নালীতে ক্যালসিয়াম জমা হওয়া প্রতিরোধ করবে।

৬। রক্তের বর্জ্য কমানোর জন্য প্রোটিন গ্রহণ কমানো

আপনার শরীর খাদ্যের প্রোটিনকে প্রক্রিয়াজাত করার ফলে বর্জ্য উৎপন্ন হয় যা রক্ত থেকে দূর হওয়া প্রয়োজন কিডনির মাধ্যমে। তাই কিডনির কাজকে কমানোর জন্য আপনার চিকিৎসক হয়তো আপনাকে কম প্রোটিন গ্রহণের পরামর্শ দেবেন।

যদি আপনার কিডনি শরীরের বর্জ্যগুলোকে ঠিকভাবে দূর করতে না পারে তাহলে আপনার কিডনি রোগটি চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে বোঝা যায়। এক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনাকে কিডনি ডায়ালাইসিস বা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট এর কথা বলবেন।

সূত্র : মায়ো ক্লিনিক



মন্তব্য চালু নেই