রানা প্লাজার ক্ষতিপূরণ ২৪শে এপ্রিলের আগেই
রানা প্লাজা ভবন ধ্বসের ঘটনায় নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার কাজ ২৪ শে এপ্রিলের আগেই শুরু হচ্ছে বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তবে প্রথম দফায় ক্ষতিপূরণের আংশিক দেয়া হবে বলেও জানাচ্ছেন তারা।
আর মাত্র দু’সপ্তাহ পরই রানা প্লাজা ভবন ধ্বসের এক বছর হতে যাচ্ছে।
বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ এই ধ্বসের ঘটনার পর নিহত ও আহত গার্মেন্ট শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। এবারে তাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে যাচ্ছে।
“৩,৬০০ জনই ক্ষতিপূরণের অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা করে পাবে তবে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পুরো অর্থ পাওয়া”
আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস বি রেড্ডি
ভবন ধ্বসের দিনটিকে সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জানানো হয় ২৪শে এপ্রিলের আগেই আংশিকভাবে ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু হতে যাচ্ছে।
কিন্তু ক্ষতিপূরণ দিতে প্রয়োজন ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অথচ তহবিলে রয়েছে মাত্র ৭ মিলিয়ন ডলার।
মূলত গত এক বছরে রানা প্লাজায় আহত ও নিহতদের স্বজনদের জন্য কি কি করা হয়েছে এবং পুরো খাতে কোন কোন উদ্যোগ বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে তার সর্বশেষ তথ্য জানাতেই বিজিএমইএ এই আয়োজন করে যাতে উন্নয়ন সহযোগীরাও ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে এক ব্রিফ্রিংএ আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক সংস্থা বা আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস বি রেড্ডি জানান কারখানায় নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের অধিকারের বিষয় দুটিকে প্রাধান্য দিয়ে নানা কর্মকান্ড চলছে।
কারখানায় পরিদর্শনের কাজ এ বছরের শেষ নাগাদ কিংবা তার আগেই শেষ হবে বলে ধারনা করছেন তিনি।
অপরদিকে শ্রমিকদের অধিকারের প্রশ্নে গত ১৫ মাসে ১৩৪ টি নতুন ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন তিনি।
রানা প্লাজা ধ্বসে একজন পোশাক শ্রমিককে উদ্ধার করা হচ্ছে
কিন্তু সমস্যা হলো ক্ষতিপূরণের তহবিল নিয়ে।
তিনি জানান, প্রাইমার্ক নামের ক্রেতা প্রতিষ্ঠান যে ৯ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে তার বাইরে অন্যান্য ক্রেতা ও সংস্থা মিলে ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ট্রাস্ট ফান্ডে দিয়েছে।
আবার এই তহবিলেও প্রাইমার্কের ১ মিলিয়ন সহায়তা রয়েছে।
“এখন তহবিলে রয়েছে সাত মিলিয়ন ডলার। কিন্তু সবার ক্ষতিপূরণ দিতে ৪০ মিলিয়ন ডলার লাগবে বলে হিসাব করা হয়েছে। ফলে উন্নয়ন সহযোগী এবং বিভিন্ন ব্রান্ডের কাছ থেকে আরো টাকার প্রয়োজন। আমরা আইএলওর পক্ষ থেকে আশা করছি ২৪ শে এপ্রিলের আগেই বড় অংকের অর্থ তারা দেবেন,” বলছেন মি রেড্ডি।
তিনি জানান, যে জাতীয় সমন্বয় কমিটি পুরো বিষয়টি দেখছে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ৩,৬০০ জনই ক্ষতিপূরণের অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা করে পাবে তবে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পুরো অর্থ পাওয়া।
সমন্বয় কমিটি ইতিমধ্যেই নিহতদের স্বজন ও আহতদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবীর আবেদন নেয়া শুরু করেছে যা সম্পন্ন করতে মাস তিনেক সময় লাগবে।
সমন্বয় কমিটি ইতিমধ্যেই তিন সদস্যের একটি কমপেনসেশন কমিশনার প্যানেল গঠন করেছে যাতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন মানবাধিকার কর্মি এবং তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল।
তিনি বিবিসি বাংলাকে জানান তারা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন।
সুলতানা কামাল জানান, ১১ এপ্রিল তারা পরবর্তী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেবেন কবে থেকে প্রথম দফার ক্ষতিপূরণ দেয়া শুরু করা যাবে।
বাংলাদেশের শ্রম আইন সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইনের আলোকেই এই ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।