প্রাকৃতিক সেতু!
নেই কোন কৃত্রিমতা; নেই মানুষের হাতের ছোঁয়া। যুগযুগ ধরে প্রকৃতির বিবর্তন আর পানির তীব্র প্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তৈরী হয়েছে একাধিক চমকপ্রদ পাথুরে সেতু। প্রকৃতির বিবর্তন ও দুর্যোগে এগুলো ধসে পড়ছে প্রতিনিয়ত।
আভিযাত্রী আর বিশেষজ্ঞদের একটি দল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে এসব সেতুর গঠন ও উৎপত্তি নিয়ে গবেষণা করেছেন। এডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটক আর অভিযাত্রীদের জন্য এমনই ১২টি চমকপ্রদ সেতুর বর্ণনা আর ছবি তুলে এনেছেন তারা।………
গ্রিন ব্রিজ অব ওয়ালেস, যুক্তরাজ্য
ওয়ালেসের সবচে দর্শনীয় স্থান এই ব্রিজটি স্থানীয় জাতীয় উদ্যানের অনর্ভূক্ত।সমুদ্র উপকূলে ঠায় দাড়িয়ে থাকা সংযোগ সেতুর একটি অংশ সময়ের বিবর্তনে পানির তীব্র স্রোতে ক্ষয়ে ধসে পড়েছে।
আয়রেস ন্যাচারাল ব্রিজ, যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উয়েওমিংয়ে জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত এই প্রাকৃতিক সেতুটির উচ্চতা ৫০ ফুট এবং দৈর্ঘ প্রায় ১০০ ফুট।
ন্যাচারাল ব্রিজ ন্যশনাল মনুমেন্ট, যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত এই সেতুটি জাতীয় উদ্যানের অন্তর্ভূক্ত। এটি তিনটি সংযোগ সেতুর সমন্বয়ে প্রাকৃতিকভাবে গঠিত। তবে এর একটি অংশ ১৯৯২ সালে ধসে পড়ে। ধসে পড়া সংযোগ সেতুটির ওজন ছিলো প্রায় চার হাজার টন। আবশিষ্ট দু’টিও খুব নাজুক হলেও ধসে পড়তে আরো বহু বছর লাগবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
পোর্ত দ্য’ আর্ক, ফ্রান্স
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে স্থানীয় একটি নদীর ওপর গড়ে ওঠা এই প্রাকৃতিক সেতুটি ১৯৯৪ সালে আবিষ্কৃত হয়। প্রায় ১৭৭ ফুট দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজটিকে চলতি বছর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে জাতিসংঘ।
লন্ডন ব্রিজ, অস্ট্রেলিয়া
লন্ডন ব্রিজের আটটি আংশের মধ্যে সাতটি এখনো সমুদ্রের ওপর ঠায় দাড়িয়ে। এটি অস্ট্রেলিয়ার পোর্ট ক্যাম্পবেল ন্যাশনাল পার্কের ভেতর অবস্থিত।
ফ্যারি ব্রিজ, চীন
বিশ্বের সবচে বড় প্রাকৃতিক সেতু হিসেবেও ধরা হয় একে। ফ্যারি ব্রিজ চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভিয়েতনাম সীমান্ত ঘেঁষা স্বায়ত্বশাসিত গুয়ানজি জুয়াং এলাকায় অবস্থিত। এর দৈর্ঘ প্রায় ৪০০ ফুট।
প্রাভচিজকা ব্রানা, চেক রিপাবলিক
ইউরোপের সবচে বড় প্রাকৃতিক সেতু এটি। খ্যাতিমান লেখক হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের সাহিত্যে উঠে এসেছে প্রাকৃতিক সেতু প্রাভচিকা ব্রানা। সেইসাথে এখানে বিশ্বের সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র ‘ক্রনিকাল অব নার্নিয়া’’র বিভিন্ন দৃশ্যেও দেখা মিলবে এর। বোহেমিয়ান ন্যাশনাল পার্কে অবস্থিত এই ব্রিজটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ ফুট এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা প্রায় ৭০ ফুট।
ওয়াদি রাম, জর্ডান
জর্ডানের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত এটি। মূলত মরুভূমিতে অবস্থিত এই প্রাকৃতিক সেতু পরিদর্শনে জিপ গাড়ি ছাড়া প্রায় অসম্ভব। তবে, অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় অভিযাত্রীরা উটের পিঠে সওয়ার হয়েই ওয়াদি রাম পরিদর্শনে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।
ইয়োহো ন্যাশনাল পার্ক ন্যাচারাল ব্রিজ, কানাডা
কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় অবস্থিত পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত এটি। দৃষ্টিনন্দন ঝরনা ও সুউচ্চ পাহাড়েরও দেখা মিলবে এখানে।
তাসসিলি নাজের, আলজেরিয়া
১৯৮২ সালে একে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকাভূক্ত করে জাতিসংঘ। পাথরের গায়ে খোদাই করা হাজার বছরের পুরানো চিত্রকর্মের জন্যও পরিচিত প্রাকৃতিক সেতু তাসসিলি নাজের। ধারনা করা হয় খৃষ্টপূর্ব ৬ হাজার সালে এগুলো আঁকা হয়েছিলো। তবে,গেরিলা তৎপরতায় সহিংস আলজেরিয়ায় এই প্রাকৃতিক আশ্চর্যের টিকে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।
আজাখিশমা ন্যাচারাল ব্রিজ, আফগানিস্তান
২০১০ সালে একদল পশ্চিমা গবেষক এ্টি আবিষ্কার করেন। তাদের মতে বিশ্বের সবচে’ বড় প্রাকৃতিক সেতুগুলোর মধ্যে অন্যতম আফগানিস্তানের আজাখিশমা ন্যাচারাল ব্রিজ।স্থানীয় গ্রামের নামেই এর নামকরণ করা হয়। প্রায় ২০০ ফুট বিস্তারের এই প্রাকৃতিক সেতুটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।
কুয়েভা দ্য লস পোর্তালিস, কিউবা
পশ্বিমাঞ্চলীয় পিনার দেল রিও প্রদেশে এটি অবস্থিত। ১৯৬২ সালে কিউবার বিপ্লবী নেতা চে’ গুয়েভারা এখানেই আত্মগোপনে ছিলেন।
মন্তব্য চালু নেই