ঝালকাঠি থানায় মেয়রের মামলা দায়েরের একদিন পর

আগুনের সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে যুবলীগ নেতার লিখিত আবেদন

ঝালকাঠি শহরের ডাক্তার পট্টিস্থ পৌর মেয়রের সাবেক তালাবদ্ধ বাস ভবনের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এজাহার রেকর্ডের একদিন পর মেয়রের সন্দেহকারী ব্যবসায়ী ও ওয়ার্ড যুবলীগ সহসভাপতি কবির আহম্মেদ মঙ্গলবার পুলিশ সুপারের কাছে আগুন নাটকের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবী করে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। মেয়র আফজালের বিরুদ্ধে সিআর (নং- ২৭/২০১৫ইং (ঝাল) মামলার বাদী ব্যবসায়ী কবির আহেম্মদ উক্ত আবেদনের অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মহাপুলিশ পরিদর্শক, উপ মহাপুলিশ পরিদর্শক বরিশাল রেঞ্জ, র‌্যাব-৮ এর পরিচালক, জেলা প্রশাসক ও অফিসার ইন চার্জ ঝালকাঠি বরাবর এ আবেদন করেছেন।

মেয়র আফজাল হোসেনের পুরানো তালাবদ্ধ বাস ভবনে গত ২৫ জানুয়ারী রাত সাড়ে ১০ টায় আগুন লাগিয়ে দেয়ার ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ:বি: ৪৩৬ কেরসিন বা পেট্রল জাতীয় দাহ্যপদার্থ দিয়ে ঘরে বা ঘরের মালপত্র পুড়িয়ে ক্ষতিসাধনের অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে প্রত্যক্ষদর্শী স্বর্নকার দিপক কর্মকার হেলমেট পরিহিত এক ব্যক্তি ও পালবাড়ী এলাকার হাতকাটা কবির সহ দুই ব্যক্তি মটোরসাইকেলযোগে কয়েকবার তার বাসার সামনে দিয়ে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছে বলে উল্লেখ করেন।

ঝালকাঠি থানার অফিসার ইন চার্জ শিলমনি চাকমা অভিযোগ জিডিভূক্ত করে তদন্তের জন্য উপপরিদর্শক আ: হালিমকে দায়িত্ব প্রদান করলেও মেয়রের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ মামলা রুজু না করায় ওসি শিলমনী চাকমা ও এসআই জাকিরকে ২৪ ঘন্টা সময় দিয়ে ২ ফেব্রুয়ারী লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করলে পুলিশ এজাহার রেকর্ড করেন।

এদিকে মেয়র আফজাল হোসেনের দায়েরকৃত অভিযোগে প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে স্বর্নকার দিপক কর্মকারের নাম উল্লেখ করায় এ ব্যাপারে তার সাথে আলাপকালে জানায়, ঘটনার সময় সে মেয়রের সাবেক বাসার সম্মুখেই দোকানে ছিল। আগুন লাগার কথা শুনে সে এগিয়ে গেলে শুনতে পায় মেয়রের ভাই, শ্যালারা বলাবলি করছে যে কবির এ রাস্তা দিয়ে গেছে। তখন সে বলেছে যে সেও কিছু সময় আগে কবির কে এ রাস্তা দিয়ে যেতে দেখেছে। কিন্তু সে কাউকে আগুন দিতে বা কোন প্যাট্রোল বোমা মারতে দেখেনি। আর তাকে কোন অভিযোগে সাক্ষী রাখার কথা কেউ বলেনি। এরাস্তাটি সবার চলাচলের জন্য একজন লোক এরাস্তা দিয়ে যেতেই পারে। কিন্তু সে জন্য যে তাকে দোস দিবো আমিতো সেটা বলতে পারবোনা। এখোন মেয়র সাহেব যদি আমার নাম বলে এটা তো আমি বলতে পারবোনা।

মেয়রের দেয়া অভিযোগের বিবরনে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা দায়েরকারী ব্যাবসায়ী ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগ সহসভাপতি কবির আহম্মেদের নাম উল্লেখ করায় বিক্ষুদ্ব হয়ে তিনি ঝালকাঠি পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী করেন।

আবেদনে উল্লেখ করেন, তার পশ্চিম চাদকাঠি এলাকায় নির্মানাধীন বিল্ডিং মেয়র আফজাল ও তার সহযোগীরা ৫ লাখ টাকা চাদা দাবী ও ৭৫ হাজার টাকা চাদা নেয়ার বিষয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় বিচারক তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট প্রদানের জন্য ওসিকে নির্দেশ দেন। পুলিশের এসআই আবুল বাসার দীর্গ প্রায় একমাস তদন্ত করে ২৩ জানুয়ারী অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়।

এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা দ: বি: ১৪৮/ ৫০৬/ ৩২৩/৩৮৫/৩৮৬ ধারায় আদালতে প্রতিবেদন প্রদান করলে প্রধান আসামী আফজাল সহ অন্য আসামীদের যোগাযোগীতে এ অগ্নিকান্ডের নাটক সাজিয়ে তাকে সহ নিরিহ লোকদের হয়রানি করার কুপ্রবৃত্তি চালাচ্ছেন। উক্ত আফজাল ও তার বাহিনী ইতিপূর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গাড়ীর বহরে হামলা, জননেতা শিল্পমন্ত্রী আমুর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার-প্রগন্ডা ছড়ানো ও আওয়ামীলীগের নাম ভাংগিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে সরকারী সম্পত্তি দখল, টেন্ডারবাজী, ঘুষ-চাদা আদায় ও সাধারন মানুষের জমিজমা দখল করে ঝালকাঠিতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে। তাই আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি ধ্বংসকারী আফজাল ও তার বাহিনীর সন্ত্রাসীদের অবৈধ কার্যকলাপ, অহেতুক ষড়যন্ত্র ও হয়রানির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন করেন।



মন্তব্য চালু নেই