বেঞ্চসহকারীসহ পাঁচজনের ১৪ বছর করে কারাদণ্ড
জামিন জালিয়াতি করে ১০৬ আসামিকে মুক্ত করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বরখাস্ত হওয়া বেঞ্চসহকারী মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়াসহ পাঁচজনকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের রায়ে দণ্ডবিধি ৪৬৬ ও ৪৭১ ধারায় আসামিদের সাত বছর করে মোট ১৪ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার করে মোট ২০ হাজার টাকা, অনাদায়ে আরও এক মাস করে দুই মাস কারাদণ্ড দেয়া হয়। উভয় ধারায় দেয়া সাজা একই সঙ্গে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণে আরও উল্লেখ করা হয়, তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্তে চরম অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। একই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাকে সতর্কও করে দেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১২ আগস্ট অতিরিক্ত দ্বিতীয় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চসহকারী মোসলেহ উদ্দিন ও এমএলএসএস শেখ নাঈমসহ অজ্ঞাত কয়েকজন বিচারাধীন ৭৬টি মামলায় বিচারকের সিল-স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া জামিননামা তৈরি করে ১০৬ আসামিকে মুক্ত করেন।
ওই ঘটনায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের নাজির মো. উবায়দুল করিম আকন্দ কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শফি উল্লাহ বিচারিক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটে উল্লেখ্য করা হয়, ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন্নাহারের সিল-স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া জামিননামা তৈরি করেন একই আদালতের পাঁচ কর্মচারী। পরে তা কেন্দ্রীয় কারাগারে পেশ করে বিশেষ ও দায়রা জজ আদালতের ৭৬টি মামলার চিহ্নিত ১০৬ আসামিকে মুক্ত করা হয়।
২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে ৭ জুন পর্যন্ত সময়ে ওই আসামিদের কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেয়া হয়।
দুদকের তদন্তে দেখা যায়, ওই ৭৬ মামলায় কোনো প্রকার জামিনের আদেশ ছাড়াই আদালতের নথিতে জামিনের দরখাস্তসহ জামিননামা অর্ন্তভুক্ত করা হয়। ওই জামিননামায় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন্নাহারের স্বাক্ষর জাল করা হয়। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা আদালতের ভেতরে অবস্থান করে বিচারকের অগোচরে গোপনে ভুয়া জামিননামাগুলো তৈরি করেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বরখাস্ত হওয়া বেঞ্চসহকারী মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া, মহানগর দায়রা জজ আদালতের নেজারত বিভাগের কর্মচারী শেখ মো. নাঈম, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের উমেদার মো. আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. ইসমাইল।
মন্তব্য চালু নেই