খালেদার আইনজীবীদের আদালতে প্রবেশে বাধা দেয়ার অভিযোগ

পুরান ঢাকার বকশিবাজারের অস্থায়ী বিশেষ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাজিরা দেয়ার সময় তার আইনজীবীদের প্রবেশ করতে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

দুর্নীতির দুই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দিতে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার পর খালেদা জিয়া আবু আহমেদ জমাদ্দারের আদালতে আসলে তার আইনজীবীরা বিচারকের কাছে এই অভিযোগ দেন।

এজলাসে বসার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বিচারককে বলেন, আদালতে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দিয়েছে। এমনকী মামলার কাগজপত্রসহ গাড়ি প্রবেশ করতে দেয়নি।

তখন বিচারক বলেন, ‘আদালতের ভেতরে কিছু হলে সেটা আমার দেখার বিষয়। বাইরে কোনো কিছু হলে সেটা আমার দেখার বিষয় না। কারণ নিরাপত্তার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কাজ করেন।’

এ সময় আইনজীবী রেজাক আলী আদালতের উদ্দেশে বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময় আইনজীবীদের বাধা দেয়া হলে আদালত তাতে শক্ত অবস্থান নিয়েছিল। এবং আদালতের পক্ষে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে।’

পরে বিচারক বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনে আমার গাড়িও তল্লাশি করতে পারবে। কিন্তু বিজ্ঞ আইনজীবীদের যাতে সম্মানহানি না হয় সে ব্যাপারে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সচেষ্ট থাকার নির্দেশ দেন। বলেন, ‘এখানে অনেক সম্মানিত ব্যক্তিরা আসেন। আমাদের যতটুকু ধারণক্ষমতা আছে ততক্ষণ তারা আসবেন। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

আজ জিয়া অরফানেজ ও ট্রাস্ট দুর্নীতির দুই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দিতে আদালতে আসেন খালেদা জিয়া। এর আগে গত সোমবার অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আদালতে এসেছিলেন তিনি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।



মন্তব্য চালু নেই