সুন্দরগঞ্জে উদ্যোগ নেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বধ্যভূমির সার্বিক ব্যবস্থাপনায়
নুরুল আলম ডাকুয়া, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :: স্বাধীনতার ৪৫ বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও কোন উদ্যোগ গৃহীত হয়নি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বধ্যভূমির সার্বিক ব্যবস্থাপনায়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে স্থানীয় গোয়ালেরঘাট নামক স্থানে পাক-হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। তৎকালীন রাজাকার, আল-বদর, আল- সাম্স বাহিনীর সদস্যদের সহযোগীতায় পাক বাহিনীর সদস্যরা মিলে এই ক্যাম্পে নারী-শিশু নির্যাতনসহ গণ-হত্যা চালায়। নির্বিচারে নিরীহ সাধারণ মানুষদের নির্যাতন গণহত্যাকারী তৎকালীন ঘাতক (পাক-হানাদার) বাহিনীর সহ¯্রাধিক সদস্যসহ তাদের দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল- সাম্সসহ পিচ্ বাহিনীর সদস্যরা এদেশের সাড়ে ৩ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তুমুল হারে যুদ্ধ চালিয়ে ৯ ডিসেম্বর রাতে ব্যর্থ হয়ে শত্রুদের অধিকাংশ পালিয়ে গেলেও এদের কতিপয় সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পন করে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত থেকে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের বিনিময়ে পরবর্তী ৯ ডিসেম্বর রাতে এদেশের দামাল ছেলেরা সুন্দরগঞ্জ হানাদার মুক্ত করতে সক্ষম হন। পরদিন অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর প্রত্যুশে সম্পন্নরুপে সুন্দরগঞ্জ হানাদার মুক্ত হওয়ায় বিজয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। তখন থেকেই প্রতি বছরের ১০ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবন পালন করা হয়। এবারেও ব্যক্তিক্রম হয়নি। বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা, বীরমুক্তিযোদ্ধা-শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারসহ মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সম্মানে উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে নানান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
কিন্তু সার্বিক ব্যবস্থাপনার অভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বধ্যভূমি যেন পড়ে আছে অব্যবস্থাপনায়। দিনে গো-চারণ, শিশু-কিশোরদের কোলাহল, সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকায় মাদক কারবারীসহ নানান কার্যকলাপীরা আশ্রয় নিয়ে এর পরিবেশ, ঐতীহ্য ও সম্মান হানির চেষ্টায় থাকে। এছাড়া একমাত্র কাঠের দরজাটি সার্বক্ষনিক খোলা থাকায় মলমুত্র ত্যাগ করাসহ নানাভাবে বধ্যভূমি ও শহীদ মিনারকে অবমাননা করছে এই অসামাজিক কার্যকলাপীরা।
বধ্যভূমির উত্তর পার্শ্বের বিলে ধ্বসে যাচ্ছে প্রাচীরের ইটগুলো। কেন্দ্রী শহীদ মিনারসহ বধ্যভূমির সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে বিদ্যুতায়ন, সংস্কার, গণ-সৌচাগার, প্রাচীর নির্মাণসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার অতীব প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে বিজ্ঞ মহল মনে করেন। এব্যাপারে মোবাইল ফোনে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত)- মুহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেণ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সংস্কার এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য প্রকল্প চেয়ে উর্দ্ধতন বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই