এই না হলে ওসি!
বাগেরহাটের ফকিরহাট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে দাবিকৃত অর্থ না পেয়ে দুই মাছ ব্যবসায়ীকে আটকের ৩ দিন পর ডাকাতি মামলায় আদালতে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানাটির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শমশের আলী স্বয়ং নাকি এ কাজের কাজী। তবে যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে তাকে সহযোগিতা করেছেন এসআই লুৎফর রহমান।
মাছ ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী ফাহিমা বেগম জানান, গত ২৯ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার খাজুরা এলাকায় তাদের ভাড়াবাড়িতে ঢুকে আসবাবপত্র ও মালামাল তছনছ করে ফকিরহাট থানা পুলিশ। পরে তার স্বামী শাহাদাত হোসেন ও দেবর ফারুক হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও নিয়ে যায় তারা। সন্ধ্যায় স্বামীকে থানায় খাবার দিতে গেলে তার কানের দুলও খুলে নেয় কর্তব্যরত পুলিশ। এ সময়, কী অপরাধে তার স্বামী ও দেবরকে আটক করা হয়েছে- জানতে চাইলে ফাহিমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তারা। পরে ওসি জানান, তার স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। এ নিয়ে টানা তিনদিন দেন-দরবার চলার এক পর্যায়ে, তারা ফাহিমাকে জানিয়ে দেন- ‘টাকা না দিলে তোর স্বামী অন্ধকার জগতে চলে যাবে।’
এ সময় আটকের বিষয়টি পুলিশ সুপারকে না জানানোর জন্যও ফাহিমাকে শাসিয়ে দেন শমশের আলী।
এ অবস্থায় দাবিকৃত অর্থ জোগাড় করতে না পেরে সোমবার সন্ধ্যায় বাগেরহাটের পুলিশ সুপার ও প্রেসক্লাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিষয়টি অবহিত করেন দিশেহারা ফাহিমা। আর, এতেই হয় হিতে-বিপরীত।
ফাহিমা আরো জানান, সাংবাদিক ও পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানোর পর সোমবার রাতে তার স্বামী শাহাদাত হোসেন ও দেবর ফারুক হোসেনকে শারীরিক নির্যাতন করে থানা পুলিশ। এরপর তাদেরকে বাসায় নিয়ে ঘরের চাউলের বস্তার ভেতর থেকে ৫০ হাজার টাকা উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে ফকিরহাট থানায় দায়েরকৃত একটি ডাকাতি মামলায় তাদের সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়। তবে ওই ডাকাতি মামলায় এজাহারভূক্ত ৭ আসামির মধ্যে তাদের নাম উল্লেখ নেই বলে দাবি করেন ফাহিমা। ওসির অর্থ দাবির বিষয়টি তার মোবাইলফোনে রেকর্ড করা আছে বলেও জানান তিনি।
তবে, সব অভিযোগ অস্বীকার করে ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ শমশের আলী জানান, গত ২৫ নভেম্বর লখপুর এলাকায় একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ডাকাতি মামলায় তাদেরকে আটক করা হয়। আটকের পর সোমবার রাতে শাহাদাতের ভাড়াবাসার চাউলের বস্তার ভেতর থেকে ৫০ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়।
মন্তব্য চালু নেই