নিজে থেকে ঘুরে যায় মিশরের এই ‘ভৌতিক’ মূর্তি, অবশেষে ফাঁস গোপন সেই রহস্য…
মিশর-রহস্য কি অন্তহীন? তেমনটাই মনে করেন পিরামিডোলজিস্ট আর রহস্যবাজ মানুষ। পিরামিডের ভিতরকার রহস্য যেমন প্রজন্মের পর প্রজন্ম মানুষকে আকর্ষণ করে আসছে, তেমনই পিরামিড থেকে তুলে আনা বিভিন্ন প্রত্নবস্তুকে ঘিরেও তৈরি হয়েছে বিভিন্ন কিংবদন্তি। তুতেনখামেনের মমি নিয়ে কম হইচই হয়নি অতীতে। ব্রিটিশ মিউজিয়ামের যে ব্লকটিতে এই বিখ্যাত মমি রাখা রয়েছে, সেখানে রাতবিরেতে বিভিন্ন বিচিত্র ঘটনা ঘটে বলে রটনাও রয়েছে বিস্তর। তার সত্যাসত্য নির্ণয় অবশ্য কেউ করতে এগিয়ে আসেননি। এর কারণ সম্ভবত একটাই, মানুষ রহস্য ভালবাসে এবং সেই কারণেই তাকে জিইয়ে রাখতে চায়। আর আশ্চর্য বিষয়, তার এই রহস্যপ্রীতিকে তাল দিতে রহস্যের অভাবও হয় না এ মরপৃথিবীতে।
সম্প্রতি ম্যানচেস্টার মিউজিয়ামে সংরক্ষিত একটি মূর্তিকে ঘিরে বেশ ঘনিয়ে উঠেছে রহস্য। ১০ ইঞ্চি দীর্ঘ এই মূর্তিটিও মিশর থেকেই আগত। ‘নেব-সেনু’ নামের এই মূর্তিটি নাকি আসলে একটি ‘সোল কন্টেনার’ বা বাংলায় ‘আত্মাদানি’। কোনও মৃত ব্যক্তির আত্মাকে এর মধ্যে বন্দি রাখা হতো বলে বিশ্বাস করতেন প্রাচীন মিশরীয়রা। যতদূর জানা যায়, ১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ এই মূর্তি তৈরি হয়েছিল। তার পরে বিভিন্ন বিচিত্র পরিক্রমা সেরে তার স্থান হয় ম্যাঞ্চেস্টার মিউজিয়ামের একটি গ্লাস কেস-এ।
২০১৩ সাল থেকে লক্ষ করা যায়, নেব-সেনু-র মূর্তিটি তার গ্লাস কেস-এর ভিতরেই মাঝে মাঝে পাক খায়। তার এই আবর্তন নিয়মিত নয়। তা হলেও দিব্যি বোঝা যায়, সে তার কাচের আধারের ভিতরে ঘুরে চলেছে। এই সূত্র ধরে গুজব ছড়ায়, তুতানখামেনের মমির আবিষ্কর্তা হাওয়ার্ড কার্টারের গল্প আবার চাউর হতে থাকে। শুরু হয় ‘মমির অভিশাপ’ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা।
বিশেষজ্ঞরা মূর্তিটিকে পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন, মূর্তিটির গঠনকৌশলেই নিহিত রয়েছে এই রহস্য। মূর্তিটি এমনভাবে তৈরি যে সামান্য কম্পনেই তা আবর্তিত হতে শুরু করে। মিউজিয়ামে দর্শকদের পায়ের চাপে সারাদিন যে কম্পন তৈরি হয়, তা নেব-সেনু-কে ঘোরানোর পক্ষে যথেষ্ট। অনেকের মতে আবার, নেব-সেনুর এই গঠনকৌশল আসলে তার ত্রুটি। কিন্তু রহস্যপ্রেমীরা সহজে হার মানতে রাজি নন। তাঁদের মতে, এই ঘূর্ণনের সবটা কারিগরি কামাল নয়। আত্মার খেলা তাতে রয়েছেই রয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই