ভারত নয়, সমস্যাটা বাংলাদেশেরই
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সারা দেশে একযোগে বিদ্যুৎ বিপর্যয় অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
রোববার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দর নিকোলাবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
গতকাল জাতীয় গ্রিডে যে সমস্যা হয়েছিল তা মূলত কী কারনে? এর জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ট্রান্সমিশন দুর্বল। সে কারণে হয়েছে, আর কোনো কারণ নাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের লাইন ও ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন অনেক দুর্বল। বলা হয়েছে ভারতের সমস্যার কারণে হয়েছে। কিন্তু না, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে হয়েছে। কারণ ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন হলো আলাদা বিষয়। তবে ওখানে প্রথম যে শব্দ হলো, দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টি তদারকি করা হয়েছে। সমস্যা হওয়ার কারণে তারা বুদ্ধিমানের মতো বন্ধ করে দিয়েছে।’
এ ধরনের সমস্যা যাতে না হয় তার জন্য বেসরকারি উদ্যোগে বরিশাল, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। আর এগুলো মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াভিত্তিক হবে বলেও জানান তিনি।
রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিদ্যুৎ সচিবও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সচির সঙ্গে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে বিদ্যুৎ সচিব উপস্থিত ছিলেন, আমাদের উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ করণীয় কী এবং যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এসময় আমি তার কাছ জানতে চেয়েছি, আমাদের উৎপাদন কত? তখন সে বললো, ১১ হাজার মেগাওয়াট। যা আমি আগেও জেনেছি। আমি ওই জায়গায় প্রশ্ন করেছি- হ্যাঁ, যদি এত উৎপাদন হয় তাহলে সরবরাহ কেন হয় ৭ হাজার? উৎপাদন ও সরবরাহের মধ্যে যে গ্যাপ (পার্থক্য) আছে তা কখনো মেনে নেয়ার মতো নয়।’
এ ধরনের ঘটনা ২০০৩ সালে ও ২০০৭ সালেও ঘটেছে। ওই সময়ে এবং শনিবারের ঘটনা কি ট্রান্সমিশনের সমস্যার কারণেই হয়েছে, নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল? এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘না আর কোনো কারণ নাই।’
তাহলে কি এ ঘটনা বারবার হতে থাকবে? অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘না বারবার হয় না। এটাতো আট বছরে ১০ বছরে হয়ে থাকে।’
এ ঘটনায় কেমন আর্থিক ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ হিসাব করতে বহু সময় লাগতে পারে।’
উল্লেখ্য, জাতীয় গ্রিডে সমস্যার কারণে শনিবার বেলা ১১টা ২৭ মিনিট থেকে অচল হয়ে পড়ে দেশের অধিকাংশ এলাকা। এর ফলে ঢাকাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অফিস, হাসপাতালেও বন্ধ হয়ে যায় কাজকর্ম। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে মহানগরগুলোতে শুরু হয় পানির হাহাকার। ভারত থেকে আসা আমদানি লাইনে সমস্যার পরেই এ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটলেও এর দায় নিতে রাজি নয় দেশটি। তাদের দাবি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে।
মন্তব্য চালু নেই