নিজামীর আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি বহাল রেখে দেওয়া আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এ রায় প্রকাশ করেন।
রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ।
নিয়ম অনুযায়ী এই রায়ের কপি হাতে পেলে এবং মৃত্যু পরোয়ানা জারির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেই সরকার সাজা কার্যকরের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে। আসামিপক্ষ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের রিভিউ আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
আপিল বিভাগের সর্বোচ্চ সাজার আদেশ হাতে পাওয়ার পর বিচারিক আদালত (ট্রাইব্যুনাল) কারাগারে মৃত্যু পরোয়ানা পাঠাবে। এরপর আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন। তিনি স্বজনদের সঙ্গে দেখাও করতে পারবেন।
ওই মৃত্যু পরোয়ানার ভিত্তিতেই সরকারের তত্ত্বাবধানে কারা কর্তৃপক্ষ সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি নেবে। তবে রিভিউ আবেদন হলে তার নিষ্পত্তি হওয়ার আগে দণ্ড কার্যকর করা যাবে না।
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন।
বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিল বিভাগের ৬ষ্ঠ রায় এটি। এর আগে আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিস্পত্তির পর জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
আপিল বিভাগের রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্য কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তবে সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশ হলেও এখন রিভিউ নিষ্পত্তি হয়নি।
এছাড়া শুনানি চলার মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযম ও বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের মৃত্যুবরণ করায় আপিলের নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
গত ৮ডিসেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে নিজামীর আপিল মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য ৬ জানুয়ারি ধার্য করা হয়।
২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসির দণ্ড দেন।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরমধ্যে ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করার অপরাধে নেতৃত্ব দেওয়ায় নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
মন্তব্য চালু নেই