বুধবারের মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করলে লাশ পড়বে
‘২ মার্চের মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করলে বাড়ি ঘরে জ্বলবে আগুন। লাশ পড়ে থাকবে পথে ঘাটে। নিখোঁজ হবে আদরের সন্তান। থাকবে না বাড়ির হাস, মুরগি, গরু, ছাগল, মহিষও।’
এমন হুমকিতে দিন কাটছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিএনপি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের।
সোমবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে বনগ্রাম ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার মোল্লার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা জব্বার মোল্লাকে না পেয়ে তার বাড়ির নৈশপ্রহরী বাবর আলীকে (৭০) মারধর করে।
স্থানীয়রা জানান, ৩৫/৪০ জনের একটি দুর্বৃত্তদল মোটরসাইকেলে করে ওই বাড়িতে গিয়ে জব্বার মোল্লা ও তার ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় তারা বলে, প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করলে বাড়ি ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হবে।
এই ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী আব্দুস সামাদ মোল্লা। তাকে বলা হয়েছে, প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করলে লাশ পড়ে থাকবে পথে ঘাটে।
খাউলিয়া ইউনয়নে বিএনপির প্রার্থী মো. সেলিম মিয়াকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এলাকার বাইরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে এই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিনুর বেগমকে তার নির্বাচনী গণসংযোগ বন্ধ করে এলাকা থেকে বের করে দেয় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীরা।
দৈবজ্ঞহাটি বিএনপির প্রার্থী খান হায়দার আলীকে প্রত্যাহার করে স্ব-পরিবারে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হোগলাপাশা ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মফিজুল হককে তার নিজ বাড়িতে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানাসহ বিভন্ন দফতরে আবেদনও করেছেন তিনি।
উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টির স্বতন্ত্র ও বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন কেউ কেউ।
প্রত্যাহারের তারিখ আসার আগেই অনেক প্রার্থী জান-মাল ও স্বজনদের বাঁচাতে প্রত্যাহারপত্র লিখে ধরিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর হাতে।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা প্রকাশ্যে নির্বাচনী সভা, সমাবেশ করে যাচ্ছেন।
বলইবুনিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শাহ্জাহান আলী খান নৌকা প্রতীক সম্বলিত পোস্টার ছেপে ঝুলিয়েছেন এবং নির্বাচনী অফিস সাজিয়েছেন প্রতীক বরাদ্দের অনেক আগেই।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের হামলা ও হুমকির ফসল হিসেবে মোরেলগঞ্জে এ পর্যন্ত চারটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো প্রার্থী নেই। আরো অনেক ইউনিয়নের প্রার্থীরা প্রত্যাহারে বাধ্য হবেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই