গাজীপুরে শিশু হত্যার দায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ির শিশু মারিয়া আক্তার (১০) হত্যার দায়ে দুই জনকে মৃত্যুদণ্ড ও এক নারীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক তাদের বিরুদ্ধে এ আদেশ প্রদান করেন। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার গোলাম মর্তুজার ছেলে আব্দুল আলিম (৪৫), ফরিদপুরের মমিনখাঁরহাট এলাকার আক্কাস শেখের ছেলে সুমন শেখ (২২)।
এ ছাড়া সত্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার দায়ে আলিমের স্ত্রী শেফালী বেগমকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় আসামী আব্দুল আলীম ও তার স্ত্রী শেফালী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সুমন শেখ পলাতক রয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী পিপি হারিছ উদ্দিন আহমদ জানান, কোনাবাড়ির এরশাদনগর হাউজিং স্টেটের একটি ৬ তলা ভবনের তৃতীয় তলায় আক্তারুজ্জামান সপরিবারে থাকেন। আক্তারুজ্জামানের মেয়ে মারিয়া আক্তার গাজীপুর শাহীন ক্যাডেট একাডেমির কোনাবাড়ি শাখার ৪র্থ শ্রেণি ছাত্রী ছিল। গত ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই সকালে মারিয়া স্কুলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাসায় না ফিরলে মারিয়ার মা বিষয়টি আক্তারুজ্জামনকে জানান।
খবর পেয়ে আক্তারুজ্জামান বাসায় ফেরার পথে সুমন ও আলীমের কাছে মারিয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন মারিয়াকে বাড়ির সামনে খেলা করতে দেখেছেন।
এ দিকে আক্তারুজ্জমান ও অন্যরা মারিয়াকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন এবং স্থানীয় মসজিদ থেকে মাইকিং করেন। খোঁজাখুঁজি ও প্রচারের পরও মায়িরাকে পাওয়া না গেলে এলাকার লোকজন ওই বাসার গ্যারেজের ভেতর মারিয়াকে খোঁজ করতে চাইলে আসামি সুমন, আলীম ও শেফালী জানান মারিয়া গ্যারেজে নেই।
একপর্যায়ে রাত ১০টার দিকে এলাকার লোকজন আসামিদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে গ্যারেজের ভেতরে ঢুকে রিজার্ভ ট্যাংকির ভেতর থেকে বইপত্র ও স্কুলব্যাগ, গ্যারেজের সুমনের থাকার চৌকির নিচ থেকে সুমনের টিশার্ট গলায় প্যাঁচানো অবস্থায় মারিয়ার লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার ও আসামিদের আটক করে।
এ ব্যাপারে আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে সুমন শেখ আদলত থেকে জামিন পেয়ে পলাতক রয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আলম চাঁদ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি হারিছ উদ্দিন আহমদ। আসামীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এস এম রফিকুল ইসলাম মুকুল ও জিয়ারত হোসেন।
মন্তব্য চালু নেই