গ্রহণযোগ্য হারে ট্রেড লাইসেন্স ফি নির্ধারণের সুপারিশ
সব সিটি করপোরেশনের জন্য ট্রেড লাইসেন্স ফি বাড়িয়ে ঘোষণা করা ‘আদর্শ কর তফসিল ২০১৪’ পুনর্বিবেচনা করে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য হারে ফি পুনর্নির্ধারণের জন্য এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
রোববার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় এ কথা জানান সংগঠনটির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনটির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, সরকার ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানোর বিষয়ে একটি ‘রিভিজিট কমিটি’ গঠন করেছে। ইতিমধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ২০১৪-২০১৫ সালের ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের সময়সীমা চলতি মাসের ৩১ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে মন্ত্রী মহোদয়ের অনুমতির অপেক্ষায় আছে, যা পরবর্তীতে গেজেট আকারে প্রকাশ হবে। গেজেট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের সময় বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
আব্দুল মাতলুব আহমাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় এফবিসিসিআই প্রথম সহ-সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), সহ-সভাপতি মাহবুবুল আলম, সংগঠনটির পরিচালক এবং সাধারণ পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এফবিসিসিআইর সাধারণ পরিষদ সদস্যদের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে এফবিসিসিআই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ নিয়মিত কার্যক্রম ছাড়াও বেশকিছু নতুন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
এসব কার্যক্রম সম্পাদনে সাধারণ পরিষদ সদস্যদের অকৃত্রিম সহযোগিতা এবং সমর্থনের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান আবদুল মাতলুব আহমাদ।
এফবিসিসিআই সভাপতি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, সরকার ও বেসরকারি খাতের যৌথ প্রচেষ্টায় দেশের অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ ও মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৩১৪ মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হয়েছে প্রায় ২৬ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এ সময় এফবিসিসিআই সভাপতি ২০১৪-২০১৫ বৎসরে গৃহীত সংগঠনরে বিভিন্ন কর্মকা- সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বেসরকারি খাতের স্বার্থে এফবিসিসিআই প্রধানমন্ত্রীর দফতর, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বিনিয়োগ বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করে কার্যক্রম গ্রহণ করছে। রাজস্ব বা ভ্যাট বিষয়ে বিদ্যমান সমস্যাসমূহ দূরীকরণের নিমিত্তে নিয়মিতভাবে এনবিআর-এফবিসিসিআই পার্টনারশিপ ডায়লগ আয়োজন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুটি ডায়লগ হয়েছে। এ ডায়লগের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সমস্যাসমূহ এনবিআরএর সদস্যদের কাছে সরাসরি তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাজস্ব সংক্রান্ত জটিলতা বা হয়রানি দূর করা সম্ভব হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এফবিসিসিআইর অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী, শূন্য পদ পূরণের জন্য সচিবালয়ে নতুন জনবল নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে এফবিসিসিআইর সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং সাধারণ পরিষদ সদস্যবৃন্দদের উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
এফবিসিসিআইর সাধারণ পরিষদ সদস্যরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বাধ্যতামূলক সদস্যপদ নিশ্চিত করার মাধ্যমে এফবিসিসিআইর অধিভূক্ত বিভিন্ন জেলা চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ ছাড়াও সদস্যরা শিল্পায়নের লক্ষ্যে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত ও ব্যাংকিং খাতের সংস্কার করার জন্য এফবিসিসিআইয়ের মাধ্যমে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
এ ছাড়াও এফবিসিসিআইসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক সংগঠনের সংস্কার, দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির জন্য পর্যাপ্ত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়ে সদস্যরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
বার্ষিক সাধারণ সভায় ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং অডিট রিপোর্ট সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
মন্তব্য চালু নেই