দ্বিতীয় দিনের মত চলছে বারডেম চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

চিকিৎসককে লাঞ্চিত করার জের হিসেবে টানা দুই দিন কর্মবিরতি পালন করছেন বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ফলে সেখানে ভর্তি হওয়া পুরনো রোগী এবং চিকিৎসা নিতে আসা নতুন রোগীরা বিপাকে পড়েছেন। যদিও চিকিৎসা বিরতির মধ্যে হাসপাতালটির জরুরী বিভাগ খোলা রয়েছে। কিন্তু সেখানে মিলছে না সঠিক চিকিৎসা সেবা। জরুরী বিভাগের দ্বায়িত্বে থাকা চিকিৎসদেরও মধ্যে গা ছাড়া ভাব। অন্যদিকে হাসপাতালটিতে ভর্তি হওয়া পুরনো রোগীরাও শঙ্কার মধ্যে আছেন। ওয়ার্ডে চিকিৎসদের নিয়মিত টহল নেই। নেই চিকিৎসাপত্র কিংবা ঔষধপত্র সরবরাহ করার ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে হাসপাতালটিতে এখন চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।

গত রবিবার রাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালটিতে ভাংচুর চালায় রোগীর স্বজনরা। এসময় তারা কয়েকজন চিকিসৎককেও প্রহৃত করেন। এ ঘটনার পরের দিন সোমবার পহেলা বৈশাখ। তাই চিকিৎসকরা সোমবার কোন ধরণের আন্দোলনে নামেনি। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে তারা কর্মবিরতি ও শাহবাগের রাজপথে এসে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা অভিযুক্তদের শাস্তির দাবী করেন।

মঙ্গলবার বারডেমের জরুরী বিভাগসহ সকল চিকিৎসা সেবা বন্ধ থাকলেও বুধবার সকাল থেকে শুধুমাত্র জরুরী বিভাগ খোলা রাখা হয়। কিন্ত সেখানে খুব একটা রোগীর চাপ নেই। কেননা, চিকিৎসদের কর্মবিরতি কথা শুনে অনেক রোগী এ হাসপাতালে আসেনি। আর যারা নিতান্তই বাধ্য হয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে এসেছেন তারা সঠিক চিকিৎসা সেবা পাবেন কিনা সেই শঙ্কায় ভুগছেন। চিকিৎসা সেবা না পেয়ে অনেক নতুন রোগীকে বারডেম হাসপাতাল ছেড়ে পিজি হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চলে গেছেন।

অন্যদিকে হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকা পুরনো রোগীদের মধ্যেও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার থেকে তারা ডাক্তাদের হদিস পাচ্ছেন না। হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পরা রোগীরা শত চেষ্টায়ও ডাক্তারদের কাছে ভিড়তে পারছেন না। ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।

বারডেমে হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর স্বজন জানান, এতদিন গড়ে চার থেকে পাচ বার ডাক্তাররা এসে রোগী দেখে যেত। কিন্তু তারা আন্দোলনে নামার পর একবার রোগীকে দেখতে আসেনি। ইতিমধ্যে অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। এভাবে চলতে থাকলে অন্য রোগীরাও অন্য হাসপাতালে সেবা নিতে চলে যেতে বাধ্য হবে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জরুরী বিভাগের চিকিৎসদের সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করা হলে নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে নারাজ চিকিৎসরা।

প্রতিদিন গড়ে প্রায় চার হাজার থেকে পাচ হাজার রোগী আসে বারডেমে চিবিৎসা নিতে। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।



মন্তব্য চালু নেই