স্বাস্থ্য খাতে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-ভারত

৩ হাজার ধাত্রী নিয়োগ শিগগিরই : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক মানের ধাত্রী প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করেছি। তিন হাজার ধাত্রীর পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। শিগগিরই তাদের নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের ৩২তম সম্মেলনের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা তার সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা নিম্নআয়ের জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। ফলে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে। আমরা ২০১২ সালেই এমডিজি-৪ অর্জন করেছি। এমডিজি-৫ অর্জনের ক্ষেত্রেও আমরা সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা সরকার গঠনের পরই স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেই। জনগণের চিকিৎসা সেবা পাওয়ার পথ সুগম করি। যুগোপযোগী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করি। এ পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। এসব ক্লিনিকে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের ল্যাপটপ ও ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে। রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হচ্ছে। আমরা ই-হেলথ ও টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছি। এর মধ্য দিয়ে আমরা দেশব্যাপী একটি ব্যাপক-ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি।’
দেশের সকল পর্যায়ের হাসপাতালে বেডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে ও হাসপাতালগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে- এমন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন নতুন জেনারেল হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। সরকার নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, হেলথ টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, নার্সিং কলেজ এবং নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করেছে। ডাক্তার, নার্সসহ এ খাতের প্রতিটি বিভাগেই জনবল বাড়ানো হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি সুস্থ জাতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়েছি। এজন্য আমরা দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, জেন্ডার সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং পরিকল্পিত পরিবার নিশ্চিত করতে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি।’
চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন। মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শেষে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কমিটির ৬৭তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন দেশগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও কর্মকর্তারা। একই স্থানে ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক কমিটির ৬৭তম সম্মেলনও শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ড. মার্গারেট চ্যান।

## স্বাস্থ্য খাতে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-ভারত
আগামী দিনগুলোতে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশ-ভারত একহয়ে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত যেহেতু খুবই স্পর্শকাতর সেহেতু ম্যালেরিয়া, কালাজ্বরসহ সকল স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী।
নাসিম বলেন, ‘হেলর্থ কার্ডে ভারত অনেকদূর এগিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনেছি। দেশের সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে আমরাও হেলথ কার্ড কার্যক্রম হাতে নিচ্ছি।’
একইসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ক্ষেত্রেওে ভারত অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে টেকনলোজি আদান-প্রদান করবো। তারা আমাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবো। তারা আমাদের চিকিৎসকদের ট্রেনিং দেবে।’
এরআগে সকালে কালাজ্বর নিমূর্লে একটি সমঝোতা স্মারকে সাক্ষর করে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, থাইল্যান্ড এবং ভারত।

## স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সম্মেলন উদ্বোধন:
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউেএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের ৩২তম সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে তিনি এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে। সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নিম্নআয়ের জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। ফলে দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে।’
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই