৩৩ মিনিটের অভ্যর্থনা, ৬ ঘণ্টার যানজট!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণঅভ্যর্থনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত ছিলো জনতার ঢল। হজরতশাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর পৌঁছাতে সময় লাগে ৩৩ মিনিট। এদিকে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তীব্র যানজটে প্রায় অবরূদ্ধ ছিল রাজধানী ঢাকা।

সরেজমিনে ঢাকার রাস্তাঘাট পরিদর্শনে দেখা যায়, বেলা ১২টা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা গণঅভ্যর্থনার উদ্দেশ্যে নানা কর্মসূচির আওতায় ক্রমশ জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রুটে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হতে দেখা যায়। ফলে বিশেষ বিশেষ কয়েকটি সড়কে বেড়ে যায় গাড়ির চাপ। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার সময় ৫টা ২০ মিনিট হলেও শেখ হাসিনাকে বহন করা বিমানটি প্রায় দেড় ঘন্টা দেরি করায় দেশে পৌঁছতে সন্ধ্যা হয়ে যায় প্রধানমন্ত্রীর। এতে যানজট আরও রাত অব্দি গড়ায়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর বিমানবন্দর থেকে গণভবনে আসতে প্রায় দশটি স্পট চিহ্নিত করে বিমানবন্দর থেকে ঢাকামুখী গাড়ি চলাচল সীমিত করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে প্রবেশ করে জাহাঙ্গীর গেট দিয়ে বের হবেন- এমন এই সংবাদ প্রচার হওয়ার পর জাহাঙ্গীর গেট থেকে গণভবন পর্যন্ত গণঅভ্যর্থনা জানাতে আসা মানুষের ঢল নামে। ফলে এসব সড়কে প্রচুর যানজট সৃষ্ট হয়। সরেজমিনে দেখা যায় বিকাল চারটার আগেই অচল হয়ে পড়ে এলাকা ও আশপাশের সব সড়ক।

দেরী হলেও রোদ ও গরম উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে ছিলেন নেতাকর্মীরা। সঙ্গে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে বাদকদল। ঢাক-ঢোল আর শেখ হাসিনার উন্নয়নের বিভিন্ন স্লোগান ছিলনেতাকর্মীদের মুখে। পথে পথে নেতাকর্মীদের অভিবাদন ও অভ্যর্থনা সিক্ত প্রধানমন্ত্রী গাড়ি থেকে তাদের অভিবাদন গ্রহণ করেন। হাত নেড়ে ও হাসিদিয়ে অভিবাদনের জবাব দেন শেখ হাসিনা।

জাতিসংঘ থেকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণঅভ্যর্থনা জানাতে শুক্রবার দুপুর থেকেই বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে রাস্তার দুই পাশে ফুল নিয়ে জড়ো হন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ অসংখ্য মানুষ। তাদের হাতে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা। ঘোড়ার গাড়ি, হাতি ও নৌকা প্রতীক নিয়ে গণঅভ্যর্থনায় হাজির হন কেউ কেউ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, আমি বিমান বন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীর বহরে করে এসেছি। আমি দেখেছি প্রচুর জমায়েত। আয়োজন ছিল গণঅভ্যর্থনার। শেষ পর্যন্ত গণউৎসবে পরিণত হয়েছে। বিশাল এ জমায়েত আওয়ামী লীগকে আরও বেশি শক্তিশালী করেছে।

জানতে চাইলে সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি জনসমাগম দেখেছি এই গণঅভ্যর্থনায়। তিনি বলেন, আমি দেখেছি প্রধানমন্ত্রীকে গণ সংবর্ধনা জানাতে আসা সকলের ভেতরে স্বত:স্ফুর্ততা, উৎসব ওআনন্দ ছিল। বলা যায়, আমাদের এই কর্মসূচিটি গণ উৎসবে পরিণত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক দুটি পুরস্কার প্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী গণভবনে পৌছালে সেখানে রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে তাকে স্বাগত জানায় একুশে পদক প্রাপ্তশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। নৃত্য শিল্পী শামীম আরা নিপা, শিবলী সাদিক। সঙ্গে ছিলেন সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীরাও।

দীর্ঘ বিমানযাত্রার পরও গণভবনে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সবার সঙ্গে গল্প করেছেন ও খোঁজ খবর নিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই