১০ টাকায় রাস্তা পার

খুব ব্যস্ত কাদের। কথা বলারও সময় নেই। রাস্তার এপার থেকে ওপারে পৌঁছালেই ১০ টাকা। যাত্রী ওঠাতে-নামাতেই যা সময় লাগছে, এমনিতে পার করতে গড়ে দুই মিনিটের বেশি লাগে না। রিকশার ভাড়া বেড়েছে কিছুটা। তবে এতটা বেশি যে রাস্তা পেড়োলেই ১০ টাকা! হ্যা, যাত্রীরাও দিচ্ছেন। অন্যদিনের মত বাগবিতণ্ডা না করেই দিচ্ছেন। কারণ এই নোংড়া পানি মাড়িয়ে আর কাপড় চোপড় ভিজিয়ে রাস্তা পার হওয়ার চেয়ে ১০ টাকা দেয়াই শ্রেয়।

রোববার দুপুরের দিকে মুষলধারে বৃষ্টির পর রাজধানীর শান্তিনগর মোড়ে এমনই চিত্র দেখা গেছে। পথঘাট পানিতে তলিয়ে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। আর জলাবদ্ধতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানজট ও জনদুর্ভোগ।

সিগনালের এক ফুরসতে কথা হল তার সাথে। বৃষ্টির দিনে নিয়মিতই এ কাজ করেন তিনি। এখানে আয় বেশি হয় বলে জানালেন কাদের।

এক প্রশ্নের জবাবে কাদের মিয়া বলেন, ‘রাস্তায় যেদিন পানি বেড়ে যায় সেদিন আমি পারাপারের কাজই করি। পানি কমে গেলে আবার ভাড়ায় যাই। পারাপার জনপ্রতি ৫ টাকা। আবার শুধু একজন যেতে চাইলে ১০ টাকা দিতে হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভাড়া না নিয়ে এভাবে পারাপার করলেই আয় বেশি হয়। কোনদিন পারাপারে হাজার টাকা কিংবা তারও বেশি আয় হয়।’ অনেক যাত্রী বিশেষ করে নারীরাই বেশি পারাপার হয়ে থাকেন বলে জানান কাদের।

কেউ কেউ প্যান্টটাকে কিছুটা গুটিয়ে নিয়ে পায়ের জুতা হাতে উঠিয়ে হেঁটে চলছেন। কিন্তু ভাঙাচোরা রাস্তা কিংবা খোলা ম্যানহোলের ভয়ে পা ফেলতে হচ্ছে খুব সাবধানে। এরই মাঝে বিপত্তি সাধছে দ্রুত গতির গাড়ী কিংবা তিন চাকার রিক্সাগুলো। তাদের গতির বেগে পথচারিদের পোশাকের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে ময়লা পানি। ত্যক্ত, বিরক্ত পথচারিরা আপন মনে বকে যাচ্ছেন গাড়ীর ড্রাইভার আর প্রশাসনের কর্তাদের। কিন্তু কে শোনে কার কথা!



মন্তব্য চালু নেই