হুম্মাম কাদেরের জামিন
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধের রায় ফাঁসের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন তার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী।
ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসানের আদালতে বুধবার উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন হুম্মাম কাদের চৌধুরী। আদালত তা মঞ্জুর করেন।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ও ছেলেকে খালাস দিয়ে আইনজীবীসহ পাঁচজনকে কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই মামলায় সাজার আদেশ পাওয়া এক আসামির আপিলের গ্রহণযোগ্যতার শুনানিতে বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চ ২২ নভেম্বর স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। রুলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ও ছেলেকে খালাসের রায় বাতিল করে কেন তাদের যথাযথ সাজা দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলেন। আদেশের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ছয় সপ্তাহের মধ্যে সাকাপত্নী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর যুদ্ধাপরাধের রায় ফাঁসের ঘটনায় তার স্ত্রী ও ছেলেকে খালাস দিয়ে আইনজীবীসহ পাঁচজনকে কারাদণ্ড দেন আদালত। এর মধ্যে ট্রাইব্যুনালে সাকা চৌধুরীর আইনজীবী ফখরুল ইসলামকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, সেই সঙ্গে এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
আর সাকা চৌধুরীর ম্যানেজার মাহবুবুল আহসান, ফখরুলের সহকারী মেহেদী হাসান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী নয়ন আলী ও ফারুক হোসেনকে দেওয় হয় সাত বছরের কারাদণ্ড। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
জামিনে থাকা সাকাপত্নী ফারহাত কাদের চৌধুরী রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত হন। আর তার ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে পলাতক দেখিয়েই আদালত রায় ঘোষণা করেন, যদিও পরিবারের দাবি, তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গত আগস্টের শুরুতে তুলে নিয়ে যায়।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের এ মামলায় দুপক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষ হয় গত বছরের ৪ আগস্ট। সেদিন শুনানিতে হাজির না থাকায় যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদেরের ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ হয়।
হুম্মামের আইনজীবী আমিনুল গণী টিটোর অভিযোগ, সেদিন শুনানিতে উপস্থিত হতে আদালত প্রাঙ্গণে নামার পরপরই ডিবি পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়া হয়।
নিখোঁজ হওয়ার ছয় মাস পর ৩ মার্চ বাড়ি ফেরেন হুম্মাম কাদের চৌধুরী। বুধবার তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকায় ২০১৫ সালের নভেম্বরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সালাউদ্দিন কাদেরের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার রায় হয়েছিল ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর। ওই রায়ের দিন সকালেই তার স্ত্রী, পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা রায়ের ‘খসড়া কপি’ও সংবাদকর্মীদেরও দেখান। তারা আদালতের রায় নিয়ে কটাক্ষও করেন।
মন্তব্য চালু নেই