হুমায়ূনবিহীন দ্বিতীয় বছর

নিজের প্রিয় চরিত্রের মত দেশের অগণিত হিমু ও মিছির আলীর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়ে দুই বছর আগে অজানার উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছেন হিমুর কারিগর জননন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ।

সেই থেকে ভক্তদের মানসপটে অন্তহীন হাহাকার। কারণ, নতুন আঙ্গিকে প্রিয় লেখকের কোনো বই আর পাঠকরা পাবেন না। দীর্ঘ সারি ধরে আর প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফও নেওয়া হবে না।

এই শূন্যতা কি শুধুই পাঠকের মাঝে? হুমায়ুন আহমেদের শূন্যতা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন তার প্রকাশক ও অমর একুশে গ্রন্থমেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। যাকে ঘিরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা নতুনমাত্রিকতা পেয়েছিল, প্রকাশনা শিল্পে এক ধরনের পেশাদারিত্বের সূচনা ঘটেছিল, সেই আকাশচুম্বি জনপ্রিয় লেখকের অনুপস্থিতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবে?

এবারের মেলা হুমায়ুন আহমেদবিহীন দ্বিতীয় মেলা। নিজের সৃষ্টিশীলতা দিয়ে একজন লেখক সমগ্র সাহিত্যাঙ্গনে শিল্প ও বাণিজ্যের সমীকরণ প্রোথিত করেছিলেন বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে এমন ভাগ্য ক’জন লেখকের ভাগ্যেইবা জোটে। প্রিয় লেখককে দ্বিতীয়বারের মত ভক্তরা পাচ্ছেন না প্রাণের বইমেলায়, শুধু দ্বিতীয়বার কেন? আর কোনদিনই পাবেন না প্রিয় এই লেখককে।

সেই লেখকের অনুপস্থিতিতে মেলা কতুটুক জমে উঠবে, আদৌ মেলায় প্রাণ ফিরে পাবে কী না সে সংশয়ে নিয়েই শুরু হচ্ছে বইমেলা। নিভে যাওয়াতে বাহ্যিকভাবে মেলার পরিবেশ খানিকটা অন্ধকারে পরিণত হলেও নিজের সৃষ্টি ও শ্রেষ্ঠত্বে গেল বছরের মত এবারের মেলায়ও হুমায়ুন আহমেদ আলো ছড়াবেন এমনটি তার ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রত্যাশা।

কারো জন্যই কোনো কিছু থেমে থাকে না, কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের মত আকাশচুম্বি জনপ্রিয় লেখকদের অনুপস্থিতি কবে কাটিয়ে উঠবে সে অনিশ্চিয়তা তো থেকেই গেল।



মন্তব্য চালু নেই