হাওর, চর ও পাহাড়ি এলাকায় স্কুল হবে আবাসিক

দুর্গম যোগাযোগের কারণে শিক্ষার্থীদের চলাচলে অসুবিধা হওয়ায় হাওর এলাকা, দ্বীপ এলাকা, চরাঞ্চল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সব পাহাড়ি এলাকায় আবাসিক স্কুল করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণ করে নিজ কার্যালয়ে বক্তব্য দেয়ার সময় এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে তার হাতে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল তুলে ধরেন। এবার যারা পাস করেছে তাদের অভিনন্দন জানিয়ে যারা পাস করতে পারেনি তাদেরকে আরও মনযোগী হয়ে পড়াশোনার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার চ্যালেঞ্চ নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘হাওর অঞ্চলগুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্গম। যে কারণে আমি ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি, শিক্ষামন্ত্রীকেও আমি বলবো, এই এলাকায় আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে দিতে হবে। প্রতিদিন পানি ভেঙে ভেঙে ছেলে মেয়েরা আসে আবার ফেরত যায়। তাছাড়া আমাদের দেশে বৃষ্টি হতেই থাকে, এটা স্বাভাবিক, তা ছাড়া কখনও কখনও ঝড়, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হয়, ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। সেটা যাতে না হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘হাওর অঞ্চল তো একটা দ্বীপের মত, বাংলাদেশে হাওর অঞ্চলের মত দক্ষিণাঞ্চলেও দ্বীপের মত রয়ে গেছে। তাছাড়া আছে পাহাড়ি অঞ্চল, এই অঞ্চলে অনেক দূর দূর পথ হেঁটে হেঁটে ছেলেমেয়েদের স্কুলে আসতে হয়। প্রতিদিন এই যে হেঁটে হেঁটে আসা যাওয়া, তাতে তো সময়ও নষ্ট হয়, তাদের পড়ার সময়টাও নষ্ট হয়।’

‘এটা যাতে না হয় যে জন্য আমাদের চরাঞ্চল, দ্বীপাঞ্চলগুলো, হাওর অঞ্চল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ পাহাড়ি এলাকা-এসব এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যতদূর সম্ভব আমরা আবাসিক করে দেব, যাতে ছেলেমেয়েরা সেখানে থেকে পড়াশোনা করবে’-বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শিক্ষা বিস্তারে সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের বর্ণনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি শিক্ষাষাকেই দেখছেন দারিদ্র্যমুক্তির প্রধান কৌশল হিসেবে। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাটা জাতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমরা বাংলাদেশটাকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে হলে শিক্ষা হচ্ছে মূল হাতিয়ার। একটা জাতিকে শিক্ষিত করে দিতে পারলে আর কিছু লাগবে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ে ভালভাবে পড়াশোনা করবে, নিজের পায়ে দাঁড়াবে, দেশের কাজে লাগবে। এরাই তো আমাদের ভবিষ্যত। এরাই এক সময় রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, নিজেদেরকে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে প্রাইমারি থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত না, উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড করেছি, সেখানে এক হাজার কোটি টাকা সিড মানিও দেয়া হয়েছে এবং সেখান থেকে আমরা বৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। আমরা চাই আমাদের যারা মেধাবী ছেলেপেলে, দরিদ্র ঘরের, কিন্তু মা-বাবার হয়ত উচ্চ শিক্ষা দেবার মত সামর্থ নাই, সেই ধরনের শিক্ষার্থীদের আমরা সহায়তা দেব, যেন তারা আরও উচ্চ মানের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।’



মন্তব্য চালু নেই