হাওরের পানিতে ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা নেই

পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে নেমে আসা পানি হাওরের সঙ্গে মিশলেও তাতে ইউরেনিয়াম বা অন্য কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থর অস্বাভাবিক উপস্থিতি ধরা পড়েনি বলে জানিয়েছেন আনবিক শক্তি কমিশনের বিশেষজ্ঞরা। সুনামগঞ্জের পাঁচটি হাওর ও একটি নদীর পানি, মরা মাছ, হাঁসের মৃতদেহ ও মাটি পরীক্ষার পর তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।

তবে বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যাপ্ত নমুনা সংগ্রহ করে তাঁরা ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারপরই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

রবিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওরে আনবিক শক্তি কমিশনের বিশেষজ্ঞ ড. দিলিপ কুমার সাহা জানান, নমুনাগুলো তারা পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নমুনায় যে পরিমাণ তেজস্ক্রিয়তা রয়েছে, হাওরে তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ তারচেয়ে কম। কাজেই পানিতে বাইরের কোনো দূষণ মিশে যায়নি।

তাহলে মাছ মরছে কেন? এ প্রশ্নের জবাবে পরমাণু শক্তি কমিশনের ধারণা, ধানচাষে সার ও কীটনাশক ব্যবহার এর কারণ হতে পারে। এ ছাড়া পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ধান পচেও পরিবেশ বিরূপ হয়েছে, যাতে মাছ ও অন্যান্য ক্ষুদ্র প্রাণী মরে যাচ্ছে।

ড. দিলিপ কুমার সাহাসহ তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল এই পরীক্ষা চালান। তারা রবিবারই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছেন।

প্রসঙ্গত, বর্ষা মৌসুমের অনেক আগেই এবার পাহাড়ি ঢলে হাওরের পানি বেড়ে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল ডুবে গেছে। সম্প্রতি হাওরাঞ্চলে মাছ মরে ভেসে উঠছে এবং প্রচুর হাঁস মারা যাচ্ছে। এ কারণে পানিতে বাইরের থেকে কোনো দূষণ এসে মিশেছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। পরে ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞরা এসে পানি পরীক্ষা করে দেখেন।

এদিকে সুনামগঞ্জে হাওরে মাছের মড়কের কারণ অনুসন্ধান করতে হাওর এলাকার পানির ভৌত ও রাসায়নিক গুণাবলী পরীক্ষা করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুরের তিন সদস্যর বিজ্ঞানী প্রতিনিধিদল। শনিবার তারা বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হাওর, তাহিরপুর উপজেলার হালিরহাওর ও মহালিয়ার হাওরে পানি পরীক্ষা করে জানান, হাওরের পানি স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। পানিতে গ্যাসের উপস্থিতি রয়েছে, এসিটিক পানি ঘন। মাছের বেঁচে থাকার অনুপযোগী। মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাসুদ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান ও ইশতিয়াক হায়দারও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই