স্বামীকে হত্যার অপরাধে স্ত্রীসহ ৪ জনের ফাঁসির আদেশ
পিরোজপুরে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যার অপরাধে স্ত্রী শিউলী বেগমসহ (৩০) চারজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. গোলাম কিবরিয়া এ দণ্ড দেন। আসামি শিউলী বেগমের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- আসাদ মাঝি (৩০), গাজী ফরিদ আহমেদ ফনি, বেলাল গাজী। স্ত্রী শিউলী বেগম বাদে অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৫ মে গভীর রাতে উল্লেখিত দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা শিউলী বেগমের পরামর্শ ও পরিকল্পনা অনুযায়ী জেলার জিয়ানগর উপজেলার কলারন গ্রামে নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত স্বামী মানিক মাঝির পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারলো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং গলা কেটে হত্যা করে। আসামিরা শিউলী বেগমের সহায়তায় মানিক মাঝির দালানের পিছনের আম গাছ দিয়ে ছাদে উঠে সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। পরে মানিক মাঝিকে হত্যা করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরের দিন ২৬ মে নিহত মানিক মাঝির ছোট ভাই মিজানুর রহমান মাঝি বাদী হয়ে জিয়ানগর থানায় অজ্ঞাতনামা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, আসাদ মাঝি ও মানিক মাঝি সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই। উভয়ে দীর্ঘদিন ধরে একত্রে সুপারীর ব্যবসা করত। সেই সুবাদে শিউলী বেগমের সাথে আসাদ মাঝির পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ তার ৪২ পৃষ্ঠার রায়ে উল্লেখযোগ্য অংশ পাঠ করে বলেন, ‘শিউলী বেগম ও আসাদ মাঝির সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের কারণে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। মানিক মাঝির দুই সন্তান মাহিন হোসেন ও মহিয়ুর হোসেন কোর্টে সাক্ষী দিয়ে বাবা হত্যার বিচার দাবি করে। সে ক্ষেত্রে আসামিদের অনুকম্পা পাবার কোনো সুযোগ নাই। সর্বোচ্চ শাস্তিই তাদের প্রাপ্য।’
১৯ জন স্বাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। বাদীপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন সরকারি কৌশুলি খান মো. আলাউদ্দিন। অপর দিকে আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী সিরাজুল হক কাঞ্চনসহ অন্যান্যরা।
মন্তব্য চালু নেই