‘স্বাধীনতা না থাকলে অভিযোগ করেন কীভাবে?’

দেশে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের যথেষ্ট স্বাধীনতা আছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, এই স্বাধীনতা আছে বলেই সরকারবিরোধীরা নানা অভিযোগ করতে পারছেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবে ৩১ তলার বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্সের ‍ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে গিয়ে সরকার প্রধান এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন সাংবাদিকতার যথেষ্ট স্বাধীনতা আছে। যদিও বিপক্ষ দল নানা জায়গায় গিয়ে অভিযোগ করে বলে, এখানে কোনো স্বাধীনতা নেই। তাদেরকে কথা বলতে দেয়া হয় না। আমি বলি যদি স্বাধীনতা নাই থাকে, তাহলে এই কথাগুলো তারা কীভাবে বলছে?’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ যে এতগুলো ইলেকট্রনিক মিডিয়া- এগুলো উন্মুক্ত করে আমরা কর্মসংস্থান ও প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেছি। এতে সাংবাদিকরা যেমন লাভবান হচ্ছে তেমনি দেশের মানুষও লাভবান হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘টেভিলিশনে কত টকশো হয়। এই টকশো শুনে কেউ কি বলবেন কথা বলার স্বাধীনতা নেই? কেউ কি বলতে পারবেন?’

গণমাধ্যমের মালিকানা ও সম্পাদক পদটি আলাদা থাকা উচিত-এই বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যিনি মালিক তিনিই হয়ে যান সম্পাদক। কিন্তু মালিকরা যেহেতু নিজের হাতে থাকে, সাংবাদিকতার সুযোগটা বাধাগ্রস্ত হয় সন্দেহ নেই।’

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সাংবাদিকদের উন্নয়নে নানা কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এর বর্ণনা দেন। বলেন তথ্য অধিকার আইন, তথ্য কমিশন আর কল্যাণ ট্রাস্ট আইন করেছে সরকার। কিন্তু এই কল্যাণ ট্রাস্টে সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় আক্ষেপের কথা বলেন তিনি। জানান, এখন পর্যন্ত কেবল মাছরাঙ্গা টেলিভশনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

সম্পদশালী গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদেরকেও কিন্তু উদ্যোগী হতে হবে। আমি চাই ট্রাস্টে ভালো একটি অ্যামাউন্ট থাকবে। অনেক সময় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায় না, ওষুধ কেনার টাকাও থাকে না। আমি চেষ্টা করি, কিন্তু চিরদিন তো আমি থাকবো না। আমি এমন একটা ব্যবস্থা করতে চাই, যেন সাংবাদিকরা বিপদে পড়লে সুবিধা পায়।’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই বাংলাদেশের মানুষ কিছু পায় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রেসক্লাবও তার চেয়ে বাইরে কিছু নয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জিতে যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর সাংবাদিকদের জন্য ১৮ তোপখানা রোডের ভবনটি প্রেসক্লাবের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু জাতীয় প্রেসক্লাবের জমিটি বরাদ্দ দিয়েছিলেন।

এক আগে বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণে অর্থ দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা। তবে পরে কিছুটা হাস্যরস করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে দিয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করিয়েছেন, এখন বলছেন টাকা দিতে হবে। এটা কেমন কথা হলো? এখানে তো অনেক রথি মহারথী বসে আছেন। তাদের অনেকে এটাই পারেন একটা বিল্ডিং তুলে দিতে।’ এই বক্তব্যে মৃদু হাসেন মঞ্চে উপস্থিত সাংবাদিকরাও।

পরে প্রধানমন্ত্রী আবার বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নিলে বাস্তবায়ন হবে, ঠেকে থাকবে না। আমার পক্ষ থেকে যা যা পারি করবো। আপনাদেরকেও উদ্যোগ নিতে হবে। এখন ডেভেলপাররা বসে আছেন, এই জায়গাটা অনেক আকর্ষণীয়।’

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। অবশ্যই স্বপ্ন দেখতে হবে, উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে।’ তবে এই স্বপ্ন যেন সক্ষমতা ছাড়িয়ে যেন উপরে চলে না যায় সেই পরামর্শও দেন শেখ হাসিনা। বলেন না হলে স্বপ্ন ভাঙার বেদনায় পড়তে হবে।



মন্তব্য চালু নেই