স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মৃত্যুঞ্জয়ী স্যামসন এইচ চৌধ
৫ জানুয়ারি ছিল দেশের খ্যাতিমান শিল্পোদ্যোক্তা ও স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের এই দিনে তিনি সিঙ্গাপুরের র্যাফে-লস হাসপাতালে ঈশ্বররের কোলে নিদ্রাগত হন। সততা, নিষ্ঠা, শ্রম, মেধা ও শৃঙ্খলা একজন মানুষকে কত উপরে নিয়ে যেতে পারেন তার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত স্কয়ার গ্রুপের স্বর্গীয় চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরী। যিনি প্রচণ্ড আস্থা ও মনোবলকে পুঁজি করে শূন্য থেকে শিখরে পৌছেছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে স্বর্গীয় স্যামসন এইচ চৌধুরী বাংলাদেশের শিল্প, কৃষি, সেবা ও আর্থিক খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখেছেন। ১৯৫৮ সালে স্কয়ার ফার্মা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। এরপর তিনি একে একে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। দেশ বরেণ্য এই শিল্পপতির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার পরিবারের পক্ষ্য থেকে আজ সোমবার দুপুরে পাবনার এষ্ট্রাস খামার বাড়ীতে প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাবনা প্রেস ক্লাব স্মরণ সভার আয়োজন করেছে। স্বর্গীয় স্যামসন চৌধুরী ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ইষ্ট বেঙ্গল ব্যাপ্টিষ্ট ইউনিয়ন,ইষ্ট পাকিস্তান ব্যাপ্টিষ্ট ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ব্যাপ্টিষ্ট ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ব্যাপ্টিষ্ট ফেলোশীপ, বাংলাদেশ ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ ফেলোশীপের সাধারণ সম্পাদক (সম্মানী), ১৯৬১-৬৪, ১৯৬৮-৭২ পর্যন্ত ইষ্ট পাকিস্তান খ্রিষ্টিয়ান কাইন্সিল, ন্যাশনাল কাউন্সিল অব চার্চেস বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক (সম্মানী), ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত খ্রিষ্টিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশের (সিসিডিবি) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ১৯৭৫ এবং ১৯৭৯ তে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব চার্চেস বাংলাদেশের সভাপতি, ১৯৭৬,১৯৭৮,১৯৮০,১৯৮৩-৮৫১৯৯০-৯৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ ফেলোশীপের সভাপতি, ১৯৮০ থেকে ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ন্যাশনাল খ্রিষ্টিয়ান ফেলোশীপ অফ বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ, ১৯৮৫ থেকে ৯০ পর্যন্ত ব্যাপ্টিষ্ট ওয়ার্ল্ড এলায়েন্সের সহ-সভাপতি, ১৯৮৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কৈননীয়ার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ১৯৮৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত দি ইউনাইটেড ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ ট্রাস্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বিবিসিএফের প্রেসিডেন্ট, ১৯৯৬ থেকে ২০০০ পর্যন্ত ন্যাশনাল খ্রিষ্টিয়ান ফেলোশীপ অফ বাংলাদেশের সভাপতি এবং বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটির জীবন সদস্য ছিলেন। এছাড়াও স্বর্গীয় স্যামসন চৌধুরী মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি, রোটারী ক্লাব অফ ঢাকা,বুড়িগঙ্গার সভাপতি মাইক্রো ইন্ডাষ্ট্রিস ডেভলপমেন্ট এ্যাসিষ্টেস এণ্ড সার্ভিসেস (মাইডাস) এর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাষ্ট্রিজের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কর্মময় জীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে এবং সরকারি প্রতিনিধিত্ব নিয়ে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তিনি বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। স্বর্গীয় স্যামসন এইচ চৌধুরী ১৯২৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ওড়াকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ খ্রীস্টাব্দে পিতা ডাঃ ইয়াকুব হোসেন চৌধুরী পাবনার আতাইকুলায় এসে আর্নল্ড মেমোরিয়াল ডিসপেনসারীতে কাজে যোগদেন। স্বর্গীয় স্যামসন এইচ চৌধুরী ছিলেন পিতা-মাতার প্রথম সন্তান। ৭ বছর বয়সে তিনি ময়মনসিংহ ভিক্টোরিয়া মিশন বোডিং স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৩০ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত কলকাতার বিষ্ণুপুর হাইস্কুলে অধ্যয়ন করেন। অধ্যয়ন শেষে ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নৌবাহিনীতে যোগদেন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে মিসেস অনিতা চৌধুরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের প্রথম সন্তান স্যামুয়েল স্বপন চৌধুরী, দ্বিতীয় সন্তান তপন চৌধুরী জন্ম, তৃতীয় সন্তান অঞ্জন চৌধুরী এবং একমাত্র কন্যা রতœা চৌধুরী।
মন্তব্য চালু নেই